প্রতীকী ছবি।
লাগাতার সংঘর্ষে আপাতত ইতি। নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সংঘর্ষবিরতিতে ভারতের শর্তে সম্মত হল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনী জম্মু-কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন অঞ্চলে মধ্যরাত থেকে গুলি বিনিময় বিরতিতে সম্মত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, দু’দেশ যাবতীয় মৈত্রীচুক্তি,
সমঝোতা মেনেই চলবে তারা।
হঠাৎ করে কেন সুর সরম করল ইসলামাবাদ, তা নিয়ে বিভিন্ন ব্যাখ্যা কূটনৈতিক শিবিরে। সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদতদানের প্রশ্নে আন্তর্জাতিক নজরদারি সংস্থা এফএটিএফ-র খাঁড়ার নীচে আছে পাকিস্তান। বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মুখে। তা ছাড়া, আমেরিকা বাইডেন ক্ষমতায় আসার পরে ওয়াশিংটনের নতুন ইনিংসে, সাফসুতরো ভাবমূর্তি বজায় রাখাটা জরুরি ইমরান খান সরকারের কাছে। সব মিলিয়ে আপাতত সীমান্তে স্বর কিছুটা নামিয়ে রাখল ইসলামাবাদ এমনটাই মনে করা হচ্ছে। সীমান্তে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রশ্নে গত কয়েক মাস ধরেই এক দিকে সক্রিয় ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল অন্য দিকে ইমরান খান সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা শাখার বিশেষ সহকারী মইদ ডব্লিউ ইউসুউ। তাঁরাই শান্তি ফেরানোর প্রশ্নে ট্র্যাক টু কথা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
২০০৩ সালে সীমান্ত এলাকায় সংঘর্ষ বিরতি কার্যকর করতে একমত হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান দুই দেশই। খাতায় কলমে এই নিয়ম এখনও বহাল। কিন্তু, অধিকাংশ সময়ে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সংঘর্ষবিরতি ভঙ্গের অভিযোগ তোলে। সূত্রের খবর, ভারত ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর ডিজিএমও-স্তরে প্রত্যেক বৃহস্পতিবার একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হত। তাতে ব্রিগেডিয়ার স্তরের অফিসারেরা অংশগ্রহণ নিতেন। ডিজিএমও স্তরে বৈঠক গত সোমবার দীর্ঘদিন পরে হয়। বৈঠকের পরে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সীমান্তে দীর্ঘমেয়াদী শান্তির লক্ষ্যে উভয় পক্ষের ডিজিএমও উভয় পক্ষের মূল বিষয় ও সমস্যাগুলি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়েছেন। উভয় পক্ষই সমস্ত চুক্তি মেনে চলার পাশাপাশি ফেব্রুয়ারি ২৪/২৫ মধ্যরাত থেকে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘর্ষবিরতিতে মেনে চলার প্রশ্নে সম্মতি জানিয়েছে। এরপর থেকে দুই সেনাবাহিনীর দুই শীর্ষ আধিকারিক হটলাইনে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন। ভারত ও পাকিস্তানের এই সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছে ন্যাশনাল কনফারেন্স, পিডিপি ও নরমপন্থী হুরিয়ত।