একটি চ্যানেলকে ইমরান বলেছেন, প্রতিষ্ঠান (সেনা) তাঁকে তিনটি বিকল্প দিয়েছিল— আস্থা ভোট, নির্বাচন এগিয়ে আনা এবং ইস্তফা। তিনি শেষ অবধি লড়বেন।
ইস্তফার কথা ভাবছেনই না।
ইমরান খান। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি রাশিয়া গিয়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তিনি দেখা করেছিলেন। ‘ভারতকে সমর্থন করা একটি শক্তিশালী দেশ’ সেই কারণে পাকিস্তানের উপরে ক্ষুব্ধ। আস্থা ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে এই অভিযোগ করলেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ-ও দাবি করলেন, তাঁর জীবন বিপন্ন বলে সুনির্দিষ্ট খবর রয়েছে তাঁর কাছে।
শক্তিশালী কোন দেশটির কথা তিনি বলছেন, ইমরান আজ তা স্পষ্ট না করলেও আমেরিকার দিকে তাঁর ইঙ্গিত স্পষ্ট। গত কাল জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় একটি হুমকি-চিঠির সূত্রে (অনেকের মতে, মুখ ফসকে) আমেরিকার নামই করে ফেলেছিলেন ইমরান। পাক প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, বিদেশি মদতে তাঁর সরকারকে গদিচ্যুত করার চেষ্টা চলছে এবং ওই চিঠিতে তার প্রমাণ রয়েছে। পাকিস্তানের একটি চ্যানেলের দাবি, ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব ব্যর্থ হলে পাকিস্তানকে ‘ফল ভুগতে হবে’— এমনই হুমকির উল্লেখ রয়েছে ওই চিঠিতে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত কাল আমেরিকার কার্যনির্বাহী রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়ে পাক বিদেশ মন্ত্রক জানিয়ে দেয়, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করা হবে না।
আজ ‘ইসলামাবাদ সিকিওরিটি ডায়ালগ’-এর মঞ্চেও ইমরান ওই ‘ফল ভোগ করার’ হুমকির প্রসঙ্গ তোলেন। সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শাহবাজ় শরিফকে আক্রমণ করে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দফতর দখল করার তোড়জোড়ে ব্যস্ত ব্যক্তিরা বলে বেড়াচ্ছেন যে, আমার মন্তব্যে নাকি আমেরিকা ক্ষুণ্ণ হবে এবং তাদের সাহায্য ছাড়া পাকিস্তান বাঁচবে না। আজ কোনও দেশ পাকিস্তানকে সম্মান করে না। যে দেশের স্বাধীন বিদেশনীতি নেই, তারা দেশবাসীর স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে পারে না।’’ এই প্রসঙ্গেই পাক প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, ‘একটি শক্তিশালী রাষ্ট্র’ তাঁর সাম্প্রতিক রাশিয়া সফর নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল। আবার সেই রাষ্ট্রটিই নিজেদের ‘বন্ধু’ ভারতের পাশে দাঁড়ায়, যারা কি না রাশিয়া থেকেই তেল আমদানি করে। আমেরিকান বিদেশ দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস যদিও বলেছেন, ‘‘ওই অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই। পাকিস্তানের সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল। ’’
একটি চ্যানেলকে ইমরান বলেছেন, প্রতিষ্ঠান (সেনা) তাঁকে তিনটি বিকল্প দিয়েছিল— আস্থা ভোট, নির্বাচন এগিয়ে আনা এবং ইস্তফা। তিনি শেষ অবধি লড়বেন।
ইস্তফার কথা ভাবছেনই না। পাক প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘শুধু যে আমার জীবন বিপন্ন তা-ই নয়, ওরা (বিরোধীরা) আমার এবং আমার স্ত্রীর চরিত্র হননে নেমেছে। আস্থা ভোটে টিকে গেলে দলবদলুদের সঙ্গে তো কাজ করতে পারব না। জানিয়ে দিয়েছি, নির্বাচন এগিয়ে আনাই শ্রেষ্ঠ বিকল্প। জনতাকে অনুরোধ করব আমাকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা দিতে, যাতে আমাদের আর সমঝোতা করতে না হয়।’’