প্রতীকী ছবি।
পাক সেনাবাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, এই অভিযোগ এনে বিক্ষোভ দেখানোয় গত ২৮ জানুয়ারি ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ইসলামাবাদে। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রথমে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ, পরে তা তুলে নিয়ে সন্ত্রাস-দমন আইনে অভিযোগ আনে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ছিলেন উত্তর ওয়াজ়িরিস্তানের এমপি মহসিন দাওয়ার এবং আওয়ামি ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আমর রশিদের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর, তাঁদের জামিনের আর্জি নিয়ে শুনানিতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লা সোমবার বলেছেন, “সমালোচনাকে ভয় পেলে চলবে না। গণতান্ত্রিক সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নিতে পারে না। এটা পাকিস্তান। ভারত নয়।”
সন্ত্রাসে মদত দেওয়া ও মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে পাকিস্তানের রেকর্ড ভাল নয়। ভারত আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব এ নিয়ে। কিন্তু ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি পাকিস্তানকেও যে পাল্টা আঙুল তোলার সুযোগ করে দিচ্ছে, ইসলামাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি আতহারের মন্তব্য সেটাই স্পষ্ট করে দিল।
পাক সংবাদমাধ্যমে তাঁর বক্তব্যের যে বয়ান প্রকাশিত হয়েছে, তা এই রকম: “গণতান্ত্রিক সরকার মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করবে, এটা আমরা আশা করি না। নির্বাচিত কোনও সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে না। সমালোচনাকে ভয় পেলে চলবে না। আদালত প্রত্যেকের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষিত রাখবে। এটা পাকিস্তান। ভারত নয়।”
কথাগুলি ইমরান খানের ও বিভিন্ন প্রদেশের সরকারের উদ্দেশে হলেও, ভারত প্রসঙ্গ টানায় বিষয়টি ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। বিচারপতি আতহার এ-ও বলেছেন, “আপনারা প্রতিবাদ জানাতে চাইলে (পুলিশ-প্রশাসনের) অনুমতি নিন। অনুমতি না-পেলে আপনাদের জন্য আদালত রয়েছে।” সরকার পক্ষের আইনজীবী সন্ত্রাসের অভিযোগের পক্ষে সওয়াল করলে, বিচারপতি তাঁর পর্যবক্ষণে বলেন, “রাষ্ট্র বা তার প্রতিষ্ঠানগুলি এত ঠুনকো নয় যে, সামান্য কয়েকটি কথায় তার উপরে আঁচ পড়বে।”
ধৃতদের অন্যতম আমর রশিদ পরে টুইট করেছেন, “আশা করি, দেশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ ও বিরোধিতাকে অপরাধ বলে দাগিয়ে দেওয়া এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী নজির হয়ে থাকবে দেশে।”