করাচির জামিয়া রশিদিয়া মাদ্রাসায় মেজর জেনারেল আসিফ গাফুর। ছবি: সংগৃহীত।
জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করেছে তারা। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে পাকিস্তান এই দাবি করলেও সম্প্রতি পাক সেনার মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুরের একটি ছবিতে তার উল্টো চিত্রটাই ধরা পড়ল।
পাক সেনা প্রধান জেনারেল কমর বাজওয়ার সঙ্গে এ সপ্তাহের শুরুতেই করাচি সফরে গিয়েছিলেন গফুর। সফরে থাকাকালীন গত ২৭ ডিসেম্বর করাচির দক্ষিণ বন্দর এলাকায় কুখ্যাত জামিয়া রশিদিয়া মাদ্রাসায় যান গফুর। জইশ জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে এই মাদ্রাসার ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আমেরিকার কালো তালিকাতেও রয়েছে এই মাদ্রাসা। এ ছাড়া, ২০০২-এ ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর রিপোর্টার ড্যানিয়েল পার্লের অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই মাদ্রাসার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
গফুর নিজে সেই মাদ্রাসা পরিদর্শনের ছবি পোস্ট করেননি ঠিকই, কিন্তু সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। গফুর সেখানে পৌঁছতেই তাঁকে ‘হিরো’র মতো স্বাগত জানানো হয়। শুধু গফুরই নন, এ মাসের শুরুতেই পাক রেঞ্জার্সের বেশ কিছু অফিসার কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন অহলে সুন্নত ওয়াল জামাত-এর প্রধান ঔরঙ্গজেব ফারুকির সঙ্গে দেখা করেন বলে এক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসে। পারভেজ মুশারফ যখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন সে সময় ২০১২-তে নিষিদ্ধ হয়েছিল সংগঠনটি। গত ২৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানের একটি খবরের ওয়েবসাইটে এই সাক্ষাত্কারের কথা প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছিল, অহলে সুন্নত-এর প্রধানের বাবার মৃত্যুর শোকবার্তা জানাতে এসেছিলেন পাক রেঞ্জার্সের আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন: এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়, বললেন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রধান
পাক সেনার ফ্রন্টিয়ার কোর-এর অফিসাররা লস্কর-এ-জঙ্গভি এবং দেফা-এ-পাকিস্তানের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে এমন বেশ কয়েকটি ছবিও ঘুরছে। জঙ্গিদের মদত দেওয়া, জঙ্গি সংগঠনগুলোকে অর্থ জোগানোর মত কাজ বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক মহল বার বার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানকে। আন্তর্জাতিক মহলের চাপে পড়ে জামাত-উদ-দাওয়া-র মতো জঙ্গি সংগঠনকে নিষিদ্ধও করেছে পাকিস্তান। কিন্তু তারা যে তলে তলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে, তা প্রকাশ্যে আসায় জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে, তা হলে কি জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতে বড়সড় হামলার ছক কষছে পাকিস্তান?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, এটা খুব আশঙ্কার বিষয় যে পাক সেনা ফের জিহাদি নেটওয়ার্ক সক্রিয় করে তুলছে।