পিকাসোর আঁকার সঙ্গে ছবি তোলার হিড়িক নিলাম সংস্থার কর্মীদের। ছবি: রয়টার্স।
বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই পাবলো পিকাসো প্রেমে পড়েছিলেন ১৭-র কিশোরী মেরি টেরেসা ওয়ালটারের। ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে প্রায় এক দশক টিকেছিল সেই প্রেম। সমাজের ভ্রুকুটি সত্ত্বেও মেয়ে মারিয়া ওরফে মায়ার জন্ম দিয়েছিলেন মেরি। কিন্তু কথা রাখেননি পিকাসো। বিয়ে করে স্ত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দেননি কখনও। বরং ক্যানভাসেই মেরিকে নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে গিয়েছিলেন। আজ থেকে ৯০ বছর আগে, জানলার ধারে উদাস দৃষ্টিতে বসে থাকা মেরির একটি ছবি এঁকেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার আমেরিকায় সেটি ৭৫৫ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকায় বিক্রি হল।
১৯৩২ সালে ‘উওম্যান সিটিং নিয়ার আ উইন্ডো’ ছবিতে মেরিকে ফুটিয়ে তোলেন পিকাসো। বৃহস্পতিবার সেটিকে নিলামে তোলে নিউ ইয়র্কের নিলাম শিল্পসামগ্রী নিলাম সংস্থা ‘ক্রিস্টিজ’। তাদের ধারণা ছিল, ৩০০-৩৫০ কোটি পর্যন্ত দাম উঠতে পারে ছবিটির। নিলাম শুরু হওয়ার ১৯ মিনিটের মধ্যে এই বিপুল দামে ছবিটি বিক্রি হয়ে যায়। এই নিয়ে পিকাসোর আঁকা পাঁচটি ছবি পর পর ৭০০ কোটির বেশি টাকায় বিক্রি হল। বিশ্বের আর কোনও শিল্পীর এমন কৃতিত্ব নেই। কোভিডের গ্রাস থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে আমেরিকা। পিকাসোর ছবি এই বিপুল অঙ্কে বিক্রি হওয়াতে শিল্পকর্মের বাজারও ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছে ‘ক্রিস্টিজ’।
শিল্পীমহলের মতে, মেরি এবং পিকাসোর ব্যক্তিগত টানাপড়েন সম্পর্কে ভালই ওয়াকিবহাল শিল্পপ্রেমী মানুষ। পিকাসো শুধু মেয়ের ভরণপোষণের টাকা দিয়েই ক্ষান্ত ছিলেন। মেরিকে ছেড়ে আরও একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু মেরি আজীবন পিকাসোকেই ভালবেসে গিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে পিকাসো মারা যাওয়ার ৪ বছর পর আত্মঘাতী হন তিনি। যে কারণে মেরির প্রতি অনেকেই সমব্যথী। তাই শুধু পিকাসো নন, মেরির জন্যও এই ছবি ঘিরে অন্য আকর্ষণ ছিল বলে মনে করছে শিল্পমহল।