প্রতীকী ছবি।
ব্রিটেন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলিতে দ্রুত নোভেল করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক পৌঁছে দিতে বায়োটেক সংস্থা অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা-র সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে বলে আজ ঘোষণা করল অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জ়েনার ইনস্টিটিউট মানবদেহে প্রতিষেধকের পরীক্ষা শুরু করেছে গত সপ্তাহে। পরীক্ষা সফল হলে দ্রুত তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। এই ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা।
এ দিকে কোভিড-১৯-এর চিকিৎসার ক্ষেত্রে জোড়া সুখবর জানিয়েছে ইজ়রায়েল ও নেদারল্যান্ডস। ইজ়রায়েলের ‘ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল রিসার্চ (আইআইবিআর)’ একটি ‘মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে পরীক্ষাগারে। এটি নোভেল করোনাভাইরাসের গায়ে লেগে থাকা প্রোটিনের কাঁটাগুলিকে নষ্ট করতে সক্ষম। আইআইবিআরের ডিরেক্টর শুহেল শাপিরা জানিয়েছেন, এটির পেটেন্ট নেওয়া হচ্ছে। এর পরে ওষুধের ঢালাও উৎপাদনের জন্য কোনও সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হবে।
এর আগে নেদাল্যান্ডসের ইউট্রেখট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরাও একই কাজ করতে সক্ষম একটি অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ পত্রিকায় প্রকাশিত পেপারে। জিনের বদল করা হয়েছে, এমন অনেক ধরনের ইঁদুরের উপরে পরীক্ষা চালিয়েছিলেন তাঁরা। এর পরে মানবদেহে কাজ করতে পারবে, ‘মনোক্লানাল অ্যান্টিবডি’র এমন সংস্করণ তৈরি করেছেন। এটির নাম ‘৪৭ডি১১’। তবে আরও গবেষণা ও পরীক্ষা বাকি, জানিয়েছেন ইউট্রেখটের বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: তহবিল গড়তে রোজা রেখেই হাঁটছেন শতায়ু
পরীক্ষার পর্বে রয়েছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষেধকও। তবে ব্রিটিশ বাণিজ্যসচিব অলোক শর্মার কথায়, “প্রতিষেধকের দ্রুত উৎপাদনের ক্ষেত্রে অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সঙ্গে যৌথ প্রয়াস গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ বাঁচাতে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।” অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার সিইও পাস্কাল সরিয়ট বলেছেন, “প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষতা বিশ্ব মানের। আশা করি, তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমরা এই প্রজন্মের সবচেয়ে মারাত্মক অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অস্ত্রটি গোটা বিশ্বের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।”
যৌথ উদ্যোগের শর্তগুলি ঠিক হবে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে। তবে প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় বা তার জ়েনার ইনস্টিউট, কোভিড-১৯ অতিমারি চলার সময়ে প্রতিষেধকের পেটেন্ট বাবদ কোনও রয়্যালটি নেবে না। পরে যা পাবে, তা-ও কাজে লাগানো হবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা বা আগামী দিনের কোনও মারাত্মক রোগ মোকাবিলার গবেষণায়। আর অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা সেই প্রতিষেধক উৎপাদন করে ব্রিটেনের পাশাপাশি বিশ্বের নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলিতে পৌঁছে দেবে। অলাভজনক নীতিতে চলবে গোটা উদ্যোগ। অর্থাৎ প্রতিষেধক তৈরি ও সরবরাহের খরচই শুধু ধরা হবে দামে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গি, এইচআইভি-র মতো করোনার টিকা না-ও বেরতে পারে কোনও দিন, বলল হু
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যলয়র ভিসি লুইস রিচার্ডসনের কথায়, “গোটা দেশের সঙ্গে আমরাও জ়েনার ইনস্টিটিউটের সাফল্য কামনা করছি। তারা সফল হলে, ব্রিটিশদের শুধু নয়, গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে নিম্ন-মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলিতে দ্রুত প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।” প্রতিষেধক তৈরির কাজে জ়েনার ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ভ্যাকসিটেক নামে একটি সাংস্থা। সেটির সিইও বিল এনরাইট জানাচ্ছেন, প্রতিষেধকের উৎপাদন ও সরবরাহের এই যৌথ উদ্যোগে তাঁর ‘খুবই খুশি’।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)