২০২২ সালের প্রথম মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল আমেরিকায়। দু’দুটো খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এক আসামিকে বৃহস্পতিবার ফাঁসির আগে বিষ ইঞ্জেকশন দেওয়া হল ওকলাহোমায়। কী অপরাধে এমন ভয়ঙ্কর সাজা?
সালটা ২০০১। ডোনাল্ড গ্রান্টের বয়স তখন ২৫ বছর। এক তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছেন তিনি। তাঁর জন্য সব কিছু করতে পারেন। খুনও! সেই প্রেমিকার জন্যই দু’দুটো খুন করে ফেলেন তিনি। কী ভাবে?
এক অপরাধ মামলায় জেল হয় ডোনাল্ডের প্রেমিকার। তাঁর জামিনের জন্য চেষ্টার কসুর করেননি তিনি। তবু জামিনের জন্য যে অর্থ দরকার তা জোগাড় করে উঠতে পারেননি। অতঃপর সিদ্ধান্ত চুরির! সেটাও এক নামজাদা হোটেলে।
কিন্তু কথায় বলে, ‘চুরি বিদ্যা মহা বিদ্যা, যদি না পড়ো ধরা’। আদালতের নথি বলছে, সে দিন ডাকাতি করতে গিয়ে হোটেল ঘরে আগুন লাগিয়ে পালান ডোনাল্ড। হোটেলের এক কর্মী অকুস্থলেই পুড়ে মারা যান। আর এক কর্মীকে ছুরি দিয়ে খুন করেন ডোনাল্ড।
পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ডোনাল্ড। দীর্ঘ দিন মামলা চলার পর ২০০৫ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত। তার পর গত ১৭ বছরে আদালতে একাধিক আবেদন করেন অভিযুক্ত।
সম্প্রতি ডোনাল্ডের আইনজীবী একটি অনলাইন পিটিশনে জানান মক্কেলের শারীরিক অবস্থা শোচনীয়। তিনি শৈশবে তাঁর মত্ত বাবার কাছে দিনের পর দিন অত্যাচারিত হয়েছেন। মানসিক সমস্যায় ভুগছেন ডোনাল্ড।
গত বুধবারই ডোনাল্ডের শেষ আবেদন খারিজ করে দেয় সে দেশের শীর্ষ আদালত। দেওয়া হয় ফাঁসি।
কিন্তু ফাঁসির আগে ঘটে এক আশ্চর্যজনক ঘটনা। ৪৬ বছরের ডোনাল্ড গ্রান্টের শরীরে ফোটানো হয় তিনটি মারাত্মক পদার্থের মিশ্রণের একটি বিষ ইঞ্জেকশন।
এই ইঞ্জেকশন প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা শুরু হয়। মাস কয়েক আগে এক আসামিকে একই ভাবে বিষ ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করা হলে তাঁর খিঁচুনি ও বমি শুরু হয়।
এর পর এই শাস্তি প্রক্রিয়াকে নিষিদ্ধ করে আমেরিকার সংবিধান। তবু ছাড় পেলেন না প্রেমিকার জন্য খুন ও চুরির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ডোনাল্ড গ্রান্ট।