চিকিৎসা পরিষেবায় জড়িত চিনের বহু কর্মীর মৃত্যু হয়েছে নোভেল করোনাভাইরাসে। ছবি: এএফপি।
নোভেল করোনাভাইরাসে উহানের উচ্যাং হাসপাতালের ডিরেক্টরের মৃত্যু ঘিরে ফের ক্ষোভের মুখে চিন সরকার। প্রথমে তাঁর মৃত্যুর খবর জানিয়েও তা চিনের সংবাদমাধ্যম থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়, ওই চিকিৎসককে জীবনদায়ী ব্যবস্থার মাধ্যমে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ফের ওই চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করলে চিন সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটাগরিকেরা।
চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম সিসিটিভি সূত্রে খবর, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন উহান শহরের চিকিৎসক লিউ ঝিমিং। ওই ভাইরাসের উৎসস্থল উহানের উচ্যাং হাসপাতালের ডিরেক্টর লিউয়ের মৃত্যুর খবর ঘিরে বিতর্কও শুরু হয়েছে। সোমবার গভীর রাতেই ওই চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রথমে জানালেও পরে তা অস্বীকার করা হয়। সে খবর সরিয়ে দিয়ে জানানো হয়, তাঁকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দিন সকালে জানানো হয়, লিউয়ের মৃত্যু হয়েছে। ওই চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই চিন জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। সেই সঙ্গে গোটা বিষয়ে চিন প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অনেকেরই দাবি, করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ব্যর্থ চিন প্রশাসন।
গত সপ্তাহেই উহান শহরে করোনায় আক্রান্ত ছ’জন চিকিৎসাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, চিকিৎসা পরিষেবায় জড়িত ১,৭১৬ জন কর্মী এই ভাইরাসে আক্রান্ত। ইতিমধ্যেই বিশ্ব জুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭২ হাজারের বেশি। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১ হাজার ৯০০ জনের।
আরও পড়ুন: করোনা সংক্রমণ কমছে? চিনের রিপোর্টে আশাবাদী হু
আরও পড়ুন: সাহায্য নিয়ে উহানে যাবে ভারতীয় বিমান
তবে লিউয়ের মৃত্যু নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে অন্য কারণে। এই প্রথম নয়, এর আগেও সরকারি সংবাদমাধ্যমে চিনের এক চিকিৎসকের মৃত্যুর খবর জানিয়েও তা সরিয়ে দেওয়া হয়। লিউয়ের মৃত্যুর খবর মনে পড়িয়ে দিচ্ছে সে কথা। ৭ ফেব্রুয়ারি উহানের এক চক্ষুচিকিৎসকের মৃত্যু ঘিরেও একই রকমের ঘটনা ঘটেছিল। করোনাভাইরাসের বিষয়ে গত ডিসেম্বরে তিনিই প্রথম সতর্ক করেছিলেন। লিও উয়েনলিয়াং নামে ওই চিকিৎসকও করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। দু’টি ঘটনাতেই মৃত্যুর খবর প্রথমে অস্বীকার করা হয়েছিল। সে ঘটনার কথা মাথায় রেখে এক নেটাগরিকের মন্তব্য, ‘‘সকলে কি ভুলে গিয়েছেন, লিও উয়েনলিয়াঙের সঙ্গে কী হয়েছিল? মৃত্যুর পরেও ওঁকে জোর করে বাঁচিয়ে রাখতে চেয়েছিল।’’ অন্য এক জনের মন্তব্য, ‘‘লিউ আগেই মারা গিয়েছেন। কিন্তু, দেহের উপর অত্যাচার করতে কিছু মানুষের ভাল লাগে।’’
লিউয়ের মৃত্যুর খবর নিয়ে এতটাই তোলাপাড় চিন, যে সে সংক্রান্ত হ্যাশট্যাগের ভিউয়ার পৌঁছেছে প্রায় তিন কোটির কাছাকাছি।