মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মদি। —ফাইল চিত্র।
নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী ইরানের মানবাধিকার কর্মী নার্গিস মহম্মদিকে তিন সপ্তাহের জন্য জেল থেকে ছাড়া হল। নার্গিসের আইনজীবী মোস্তাফা নিলি সমাজমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যের কারণে তিন সপ্তাহের জামিন দেওয়া হয়েছে তাঁর মক্কেলকে।
জেল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট না-জানালেও তাঁর ঘনিষ্ঠদের অনুমান, ৫২ বছর বয়সি নার্গিস ক্যানসারে আক্রান্ত। ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় সম্প্রতি তাঁর ডান পায়ের হাড়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে জেলের হাসপাতালেই। কিন্তু তার পরেও জেলে রেখে দেওয়া হয়েছিল নার্গিসকে। তাঁর আইনজীবীরা বার বার জামিনের জন্য আর্জি জানাচ্ছিলেন। অবশেষে, মঙ্গলবার বাড়ি ফেরার অনুমতি পান নার্গিস। তবে মাত্র ২১ দিনের জন্য। নার্গিস জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তাঁর পরিবারের তরফে গত কাল জানানো হয়, ‘অ্যাম্বুল্যান্সে উঠেছেন নার্গিস। বাড়ি ফিরছেন। তাঁর হাঁটার ক্ষমতাটুকুও নেই।’ পরিবারের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া তাঁদের দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ।
তবে তিন সপ্তাহের এই রেহাই নার্গিসের সেরে ওঠার পক্ষে যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন তাঁর সহকর্মী, আত্মীয় ও আইনজীবীরা। নার্গিস যে মানবাধিকার সংগঠনের প্রধান, সেই ‘ডিফেন্ডার্স অব হিউম্যান রাইটস সেন্টার’-এর তরফে এই স্বল্পমেয়াদের জামিনের সমালোচনা করে বলা হয়, নার্গিসের চিকিৎসার জন্য অন্তত তিন মাসের জামিন প্রয়োজন ছিল। চিকিৎসকেরাও বারবার তাই বলছেন। কিন্তু প্রশাসন মানছে না।
নরওয়েজীয় নোবেল কমিটি আজ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা বরাবর বলে এসেছি, নার্গিস মোহাম্মদিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। আমরা আশা করি, ইরানের প্রশাসন বহির্বিশ্বের চাপে পড়ে অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’
রাষ্ট্রদোহের মামলায় অভিযুক্ত নার্গিস ২০২১ থেকে তেহরানের কুখ্যাত এভিন কারাগারে বন্দি। ২০২৩-এ নোবেল শান্তি পুরস্কার প্রাপক হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা হওয়ার পরে নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছিল তেহরান। নার্গিসের যমজ ছেলেমেয়ে তখন স্টকহলমে গিয়ে মায়ের পুরস্কার গ্রহণ করেন। কয়েক মাস আগে মারা যান নার্গিসের বাবা। তখনও জামিন দেওয়া হয়নি তাঁকে।