National Highway Toll Tax

ফের বাড়ছে জাতীয় সড়কের টোল ট্যাক্স, ক্ষোভ জানিয়ে পরিবহণ দফতরকে চিঠি বাস সংগঠনের

যে হেতু গত ৮ বছর ধরে রাজ্য সরকারের কোনও স্তরে বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি, তাই বেসরকারি বাসমালিকদের আয় বাড়েনি। বরং করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে যে লকডাউন হয়েছিল, তার ফলে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবসা মার খেয়েছে। সে কারণে পরিবহণ দফতর অবিলম্বে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে এ রাজ্যে টোল ট্যাক্স না বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ১২:৪০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

নিয়মমাফিক আগামী ১ এপ্রিল থেকে বাড়তে চলেছে জাতীয় সড়কের টোল ট্যাক্স। সেই টোল ট্যাক্স বৃদ্ধি নিয়ে এ বার পরিবহণ দফতরকে চিঠি দিল বেসরকারি বাস সংগঠন। সরকারি নিয়মমাফিক প্রতি বছর এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে দেশ জুড়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয় জাতীয় সড়কের টোল ট্যাক্স। মঙ্গলবার থেকে নতুন টোল ট্যাক্স নেওয়া চালু করবেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে পরিবহণ দপ্তরকে চিঠি দিয়েছে। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। তাদের তরফ থেকে পরিবহণ দপ্তরকে চিঠি দিয়ে জাতীয় সড়কের এই টোল ট্যাক্স বৃদ্ধিতে হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, রাজ্যে থাকা জাতীয় সড়কগুলিতে টোল ট্যাক্স বৃদ্ধি করতে কেন্দ্রীয় পূর্ত সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের পাশাপাশি রাজ্য সরকারেরও ভূমিকা রয়েছে। তাই এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলির দাবির কথা জানাক কেন্দ্রকে।

Advertisement

যে হেতু গত ৮ বছর ধরে রাজ্য সরকারের কোনও স্তরে বাসের ভাড়া বাড়ানো হয়নি, তাই বেসরকারি বাসমালিকদের আয় বাড়েনি। বরং করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে যে লকডাউন হয়েছিল, তার ফলে বেসরকারি পরিবহণ ব্যবসা মার খেয়েছে। সে কারণে পরিবহণ দফতর অবিলম্বে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে এ রাজ্যে টোল ট্যাক্স না বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেসরকারি পরিবহণ ব্যবসা কী ভাবে মার খাচ্ছে, তা আমরা বাসমালিকেরা প্রতি মুহূর্তে টের পাচ্ছি। এর মধ্যে যদি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নিজেদের টোল ট্যাক্স বৃদ্ধি জারি রাখে তা হলে আমাদের পক্ষে বাস পরিষেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের নিজস্ব আইন রয়েছে। সেই আইনে উল্লেখ রয়েছে জাতীয় সড়কের সংলগ্ন একটি সার্ভিস রোড রাখতে হবে। কোনও ব্যক্তি চাইলে জাতীয় সড়ক ব্যবহার না করে বিনা টোল দিয়ে সেই সার্ভিস রোড দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন। কিন্তু আমাদের রাজ্যের কোথাও জাতীয় সড়কের সঙ্গে সার্ভিস রোড নেই। ‌যদি নিয়ম মেনে প্রতি বছর জাতীয় সড়কের টোল ট্যাক্স বাড়ানো যেতে পারে, তা হলে কেন বিকল্প সার্ভিস রোড তৈরি করা হবে না?’’

পশ্চিমবঙ্গের সব প্রান্ত মিলিয়ে প্রায় ৫২টি জাতীয় সড়ক রয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ এপ্রিল থেকে ভারতের জাতীয় সড়কগুলিতে টোল ট্যাক্স বাড়ানো হবে। গাড়ি ও হালকা যানবাহনের ক্ষেত্রে টোল ট্যাক্স প্রায় ৫ শতাংশ এবং ভারী যানবাহনের ক্ষেত্রে প্রায় ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে জাতীয় সড়কগুলিতে প্রতি কিলোমিটারে টোল ট্যাক্স ২.১৯ টাকা নেওয়া হয়। নতুন হার অনুযায়ী, এই টোল ট্যাক্সের পরিমাণ বাড়বে, তবে নির্দিষ্ট পরিমাণ নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট সড়ক ও টোল প্লাজার উপর। টোল প্লাজার ২০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বসবাসকারীদের জন্য মাসিক পাসের মূল্যও ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে জাতীয় সড়কগুলিতে সংগৃহীত টোল ট্যাক্সের মোট পরিমাণ ছিল ৩৩,৮৮১.২২ কোটি টাকা, যা তার আগের বছরের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি।

Advertisement

এই টোল ট্যাক্স বৃদ্ধির ফলে জাতীয় সড়কগুলিতে যাতায়াতের খরচ অনেকটাই বাড়বে। ফলে বেসরকারি বাস চালানোর খরচ বেড়ে যাবে বলেই মত বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির নেতা রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা পরিবহণ দফতরকে অনুরোধ করব, যাতে আমাদের দাবিগুলি যথাযথ ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তুলে ধরুক। কারণ, আমাদের মতামত না নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নিজেদের সিদ্ধান্ত আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবেন, এমনটা হতে পারে না। তাই, পরিবহণ দফতরের উচিত যথাযথ ভাবে বেসরকারি বাস সংগঠনগুলির অবস্থান তাদের সামনে তুলে ধরা।’’ উল্লেখ্য, কেবলমাত্র দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা বিদ্যাসাগর সেতুর টোল ট্যাক্স আদায় করে রাজ্য সরকার। কিন্তু ১৯৯২ সালে উদ্বোধনের সময় যে পরিমাণ কর নেওয়া হত, এখনও তা অপরিবর্তিত রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement