সরকারি কোভিড-নীতির বিরুদ্ধে জিয়াংসু প্রদেশে বিক্ষোভ। ছবি- রয়টার্স।
কড়া কোভিড নীতির বিরুদ্ধে চিনে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে ক্ষোভের আঁচ। দিনের পর দিন ঘরবন্দি হয়ে থাকার সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সরব হয়ে রবিবারও রাজধানী শহর বেজিং এবং শাংহাইয়ের পথে নামলেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। রাজপথে বিক্ষোভ দেখালেন শিঙ্গুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। স্লোগান তুললেন, ‘‘লকডাউন চাই না, মুক্তি চাই।’’
সম্প্রতি চিনে যে হারে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তাতে বেজিং-সহ ঘনজনবসতির শহরগুলো আবার ‘তালাবন্ধ’ হওয়ার মুখে। বেজিংয়ে ইতিমধ্যেই শপিং মল, পার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষকে বলা হচ্ছে, যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকতে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও সরকার এখনও করোনা-শূন্য নীতি (জ়িরো কোভিড পলিসি) থেকে সরে আসেনি। অর্থাৎ, দেশে করোনা সংক্রমণ শূন্য না হওয়ার পর্যন্ত কড়াকড়ি বন্ধ থাকবে। যার প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের রোজগারে, ব্যবসা-বাণিজ্যে।
শুধু তা-ই নয়, মানুষের ক্ষোভ আরও জোরালো হয়েছে এই কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই জিনঝিয়াং প্রদেশে একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়। ওই প্রদেশের রাজধানী উরুমকিউই-এর একটি বহুতল আবাসনে গত বৃহস্পতিবার আগুন লাগে। তাতে প্রাণ হারান সেখানকার দশ জন বাসিন্দা। আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, বাড়িতে ‘তালাবন্দি’ থাকার জন্যই অনেক বাসিন্দা আবাসন ছেড়ে বেরোতে পারেননি। আগুন লেগে যাওয়ার পরেও অনেকে ঘরের মধ্যেই আটকে পড়েন বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই চিনের নানা প্রদেশে কোভিড-নীতি শিথিল করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে জনতা। শাংহাইতে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মোমবাতি জ্বালিয়ে স্মরণ করা হয়। জমায়েত থেকে চিন সরকার এবং প্রেসিডেন্ট জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে স্লোগান তোলা হয়। সেই বিক্ষোভই এ বার চিনের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ছে ধীরে ধীরে। অন্তত প্রবণতা তা-ই বলছে।