ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নিকি হ্যালি। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকান প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘বুড়ো ও মানসিক ভাবে অনুপযুক্ত’ বলে আক্রমণ হানলেন তাঁরই প্রাক্তন অধস্তন নিকি হ্যালি। অন্য দিকে, নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অন্যতম দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী নিকির অভিবাসী বংশ পরিচয় নিয়ে রীতিমতো ব্যঙ্গ করলেন ট্রাম্প। বললেন, নিকির প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্যতাই নেই।
এ দেশে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রহর যত এগিয়ে আসছে, ততই দিকে দিকে জমে উঠছে তরজা। রিপাবলিকান দলের মধ্যে শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী কে হবেন, সেই লড়াইও রীতিমতো বিনোদনে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি আইওয়া প্রদেশের রিপাবলিকান পার্টির প্রাথমিক নির্বাচন বা ‘ককাস’-এ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপুল ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। পরবর্তী রিপাবলিকান প্রাইমারি নিউ হ্যাম্পশায়ারে, ২৩ জানুয়ারি। তার আগে নির্বাচনী প্রচার জমে উঠেছে নিকি-ট্রাম্পের তরজায়।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রাথমিক পর্বে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান, এই দু’টি দলের অভ্যন্তরে নির্বাচন হয়। ভোটাভুটির মাধ্যমে দেখা হয়, কোন প্রার্থী দলের ভোটারদের বেশি পছন্দের। শেষ পর্যন্ত সেই প্রার্থীকেই দল প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী করে। রিপাবলিকান দলের এখন তিন প্রধান প্রার্থী— ট্রাম্প, ফ্লরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিস এবং রাষ্ট্রপুঞ্জে আমেরিকার প্রাক্তন দূত নিকি হ্যালি। আইওয়া ককাস-এ ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে বাকি দু’জনকে অনেক পিছনে ফেলে দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে ডিস্যান্টিস পান ২১.২ শতাংশ ভোট আর হ্যালি ১৯.১ শতাংশ।
পরবর্তী নিউ হ্যাম্পশায়ারের নির্বাচনের গুরুত্ব যথেষ্ট। সিএনএন-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, নিকি ট্রাম্পের থেকে আইওয়ায় মাত্র সাত পয়েন্টে পিছিয়ে রয়েছেন। আবার অনেকে বলছেন, নিউ হ্যাম্পশায়ারের রিপাবলিকানরা মধ্যপন্থী, স্বাধীন চিন্তাধারার এবং অনেক বেশি শিক্ষিত। তাই ট্রাম্প-ঝড় সেখানে না-ও দেখা যেতে পারে।
নিউ হ্যাম্পশায়ারে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে, ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হলের হামলার ঘটনার দায় নিকি ও তৎকালীন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির উপরে চাপিয়েছেন ট্রাম্প। সেই প্রসঙ্গে নিকি বলেছেন, ‘‘সে দিন ক্যাপিটলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সামলাতে আমি ব্যর্থ হয়েছি বলে বার বার আক্রমণ করছেন ট্রাম্প। কিন্তু ঘটনার দিন আমি ওয়াশিংটনেই ছিলাম না। দফতর থেকে অনেক দূরে ছিলাম।’’
এর পাশাপাশি, ট্রুথ সোশালে ট্রাম্প নিকির ভারতীয় বংশপরিচয় এবং অভিবাসী যোগ নিয়ে ব্যঙ্গ করেন। তাঁর নামের ভুল উচ্চারণ করেন। প্রসঙ্গত, নিকির পুরো নাম নিমরতা নিকি রণধাওয়া হ্যালি। মাইকেল হ্যালিকে বিয়ের পরে তিনি নিকি হ্যালি নামটুকুই ব্যবহার করেন। ট্রাম্প তাঁর প্রথম নাম নিমরতাকে বার বার ভুল বানানে উচ্চারণ করেছেন। অনেকের মতে, এই ভুল ট্রাম্পের ইচ্ছাকৃত।
এত দিন নিকি ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে বিরত থাকলেও ট্রাম্পের খোঁচার পর মুখের আগল খুলেছেন। ট্রাম্পকে সরাসরি ‘বুড়ো ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার মতো মানসিক স্থিতিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন। নিকির আরও দাবি, উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন, চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতো স্বৈরাচারীরা ট্রাম্পের বিশেষ পছন্দের মানুষ। বার বার ওঁদের ভূয়সী প্রশংসা করে ট্রাম্প তাঁর পছন্দ-অপছন্দ মানুষের সামনে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।