চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে পৃথিবীতে ফিরল নাসার মহাকাশযান ওরিয়ন। ছবি: টুইটার।
চাঁদের কক্ষপথে ঘুরে পৃথিবীতে ফিরল নাসার মহাকাশযান ওরিয়ন। রবিবার সকালে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর প্রশান্ত মহাসাগরে আছড়ে পড়েছে সেটি। চাঁদে এই মহাকাশযান যে উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল, তা সফল, দাবি আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থার।
রবিবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিট নাগাদ মেক্সিকোর বাজা ক্যালিফোর্নিয়া উপদ্বীপের কাছে সমুদ্রে এসে পড়েছে ওরিয়ন। নাসার ‘আর্টেমিস ১’ মিশনের ম্যানেজার, মাইক সারাফিন বলেছেন, ‘‘এই মিশনটি আমাদের কাছে খুবই চ্যালেঞ্জিং ছিল। মিশনের সাফল্য এমনই দেখতে হয়।’’
ওরিয়ন সমুদ্রে এসে পড়ার পর আমেরিকার সামরিক হেলিকপ্টার এবং কিছু নৌকা মহাকাশযানটির কাছে যায়। প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে চলে পর্যবেক্ষণ। মহাকাশযানটিকে খুঁটিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পরেই জল থেকে তা তোলা হয়। আমেরিকার নৌ বাহিনীর একটি জাহাজে চাপিয়ে ওরিয়নকে পাঠানো হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায়।
চাঁদের কক্ষপথে প্রায় ৭৯ মাইল অতিক্রম করেছে ওরিয়ন। পৃথিবী থেকে ২ লক্ষ ৭০ হাজার মাইল দূর পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছিল সে। তার পর ২ সপ্তাহের মধ্যে পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে মহাকাশযানটি।
চাঁদে কাজ মিটিয়ে ঘণ্টায় প্রায় ২৪ হাজার ৫০০ মাইল বেগে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছিল ওরিয়ন। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের পর তার গতিবেগ দাঁড়ায় ৩২৫ মাইল প্রতি ঘণ্টায়। এর পর কয়েকটি প্যারাশুটের সাহায্যে ওরিয়নের গতি আরও খানিক নিয়ন্ত্রণ করে নাসা। অবশেষে ঘণ্টায় ২০ মাইল বেগে সমুদ্রে পড়ে মহাকাশযানটি।
গত ১৬ নভেম্বর ফ্লোরিডা থেকে ওরিয়নের যাত্রা শুরু হয়েছিল। চাঁদে মানুষের প্রথম পদার্পণের ৫০ বছর পর ফের মানুষকে পৃথিবীর উপগ্রহে পাঠানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে নাসা। নতুন সেই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আর্টেমিস’, যার প্রথম ধাপে যাত্রীবিহীন মহাকাশযান ওরিয়ন চাঁদে পাড়ি দিয়েছে। যার মূল লক্ষ্য ছিল, চাঁদের মাটিতে নামার জন্য সম্ভাব্য ল্যান্ডিং সাইটগুলি চিহ্নিত করা।
‘আর্টেমিস’-এর আরও দু’টি ধাপ পরিকল্পনা করেছে নাসা। দ্বিতীয় ধাপেও একই পরীক্ষা নিরীক্ষা চলবে। তা সফল হলে তৃতীয় ধাপের অভিযানে চাঁদে পাড়ি দেবে মানুষ। কোন কোন মহাকাশচারীকে ‘আর্টেমিস’ মিশনে চাঁদে পাঠানো হবে, তা ২০২৩ সালের শুরুর দিকেই ঘোষণা করতে চলেছে আমেরিকান মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।