অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
স্বেচ্ছাসেবক লাগবে আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার। তাঁদের সঙ্গে আছে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থাও (ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি)। যাঁরা ৬০ দিন শুয়ে কাটাতে পারবেন, তাঁদেরকেই বেছে নিচ্ছে এই দুই মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। শুয়ে থাকার জন্য যে পরিশ্রম হবে, তার জন্য মিলবে পারিশ্রমিকও। প্রতি স্বেচ্ছাসেবককে তার জন্য ১৩ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে জানানো হয়েছে এই দুই সংস্থার তরফে।
গবেষণার জন্যই লাগবে শুয়ে থাকতে পারবেন, এই ধরনের স্বেচ্ছাসেবক। মাধ্যাকর্ষণহীন কোনও জায়গা, যেখানে শরীরের কোনও ওজন নেই, সেখানে মানুষের শরীরে কী ধরনের প্রভাব পড়ে তা বুঝতেই এই পরীক্ষা। ওজনশূন্য জায়গায় শরীরের পেশি এবং হাড়ের গঠনে কোনও পরিবর্তন আসছে কিনা, এলেও তা কী ধরনের, তা আরও ভাল করে বোঝা যাবে এই গবেষণার ফলে।
চাঁদ অথবা মঙ্গলের মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর থেকে অনেকটাই কম। তাই মহাকাশচারীরা সেখানে দীর্ঘ দিন থাকলে, শরীরের উপর কী প্রভাব পড়বে, তা জানতে চায় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি। সেই বিষয়টি পৃথিবীর বুকেই পরীক্ষা করে বুঝে নিতে চান বিজ্ঞানীরা। এই পরীক্ষার নাম দেওয়া হয়েছে অ্যান্টি গ্র্যাভিটি বেড রেস্ট স্টাডি।
আরও পড়ুন: বলয়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকা শনির আরও ৫টি চাঁদের হদিশ পেল নাসা
যাঁরা স্বেচ্ছাশ্রম দেবেন, তাঁদের বিশেষ ভাবে বানানো একটি বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে। এই বিছানায় মাধ্যাকর্ষণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। অর্থাৎ, কখনও নিজেকে ভারী আবার কখনও নিজেকে পালকের মতো হালকা মনে হবে। মাধ্যাকর্ষণ না থাকলে শরীরের উপর কোনও খারাপ প্রভাব পড়লে তা কীভাবে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব, সেই পরীক্ষাও করবে নাসা।
মার্কিন সংবাদপত্র সিএনএন জানাচ্ছে, এই কাজের জন্য স্বেচ্ছাসেবকরা পাবেন ১৬,৫০০ ইউরো, অর্থাৎ প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক করা হয়েছে, এই গবেষণার জন্য নেওয়া হবে বিভিন্ন বয়সের ১২ জন পুরুষ এবং ১২ জন মহিলা। সারা পৃথিবী থেকেই নেওয়া হবে স্বেচ্ছাসেবক। পরীক্ষা ৬০ দিন হলেও সব মিলিয়ে থাকতে হবে প্রায় ৮৯ দিন। কারণ প্রথম ৩০ দিন ধরে বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে স্বেচ্ছাসেবকদের।
আরও পড়ুন: আপনার ফোন ট্যাপ হচ্ছে না তো? নিজেই কী ভাবে বুঝবেন
নাসার বিজ্ঞানী লেটিসিয়া ভেগা জানিয়েছেন, ‘‘আগামী দিনে আরও বেশি করে মহাকাশে বিজ্ঞানীদের পাঠানো হবে । তাঁদের যাত্রা সুরক্ষিত করতে এবং তাঁরা যাতে মহাকাশে গিয়ে নিরাপদে থাকতে পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’