ভিডিয়ো মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথ সম্মেলনের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি সংগৃহীত।
এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বরকে সঙ্গে নিয়ে আমেরিকা এবং ইউরোপের সঙ্গে কূটনৈতিক দরকষাকষিতে নামতে চাইছে ভারত। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, জি২০-র বছরভর বৈঠক এবং শীর্ষ সম্মেলনের আগে আজ ভিডিয়ো মাধ্যমে গ্লোবাল সাউথ সম্মেলন করার এটাই মূল উদ্দেশ্য মোদী সরকারের।
ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে প্রথম বিশ্বের বিশাল চাপ রয়েছে ভারতের উপরে। প্রথমত, রাশিয়ার উপরে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে শান্তি ফেরানোয় সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার চাপ। দুই, পশ্চিমের নিষেধাজ্ঞা মেনে রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ভাবে কোণঠাসা করার লক্ষ্যে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ। এক কথায়, মস্কো থেকে অশোধিত তেল এবং জ্বালানি আমদানি বন্ধ করার চাপ রয়েছে নয়াদিল্লির উপরে।
স্বাভাবিক ভাবেই ভারতের পক্ষে জ্বালানি এবং খাদ্যের এই সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে এবং মূল্যবৃদ্ধির আবহাওয়ায় দীর্ঘদিনের অংশীদার রাষ্ট্র রাশিয়াকে অচ্ছুৎ করা কার্যত অসম্ভব। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, উন্নয়নশীল এবং গরিব দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়ে প্রথম বিশ্বকে এই বার্তাই দিতে চাইছে ভারত, যা কয়েক দিন আগে ভিয়েনায় বসে বিদেশমন্ত্রী দিয়েছিলেন। সেটি হল, ইউক্রেন সংঘাতই এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সঙ্কট নয়। বিশ্বের অধিকাংশ এলাকা জুড়ে খাদ্য, সার, জ্বালানির সঙ্কট, মূল্যবৃদ্ধির মতো সমস্যাগুলিও রয়েছে। বিদেশমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল, বাকিদের (আমেরিকা ও ইউরোপ) কানে তা পৌঁছয় না।
আজ গ্লোবাল সাউথ সম্মেলনের উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ, তাইল্যান্ড, উজ়বেকিস্তান, ভিয়েতনাম, কাম্বোডিয়া, গায়ানা, মোজ়াম্বিক, মঙ্গোলিয়ার মতো দেশের শীর্ষ প্রতিনিধিরা। প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রনেতা ও প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন, “ভারতের কথা বলতে গেলে বলতে হয়, আপনাদের উদ্বেগ আমাদের উদ্বেগ। আপনাদের অগ্রাধিকার আমাদের অগ্রাধিকার। এটা স্পষ্ট যে, বিশ্ব আজ সঙ্কটের মধ্যে। এটা বলা কঠিন যে আরও কত দিন এই অস্থিরতা চলবে।” তাঁর কথায়, “আমরা আরও একটি কঠিন বছর শেষ করলাম। এই বছর যুদ্ধ, সংঘাত, সন্ত্রাসবাদ, ভূকৌশলগত উদ্বেগের সাক্ষী থেকেছি আমরা। খাদ্য, সার এবং জ্বালানির দাম বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটছে। অতিমারির ফলে তৈরি হওয়া অর্থনৈতিক সঙ্কট রয়েই যাচ্ছে।” উন্নয়নশীল দেশগুলির উদ্দেশে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মোদী বলেন, ‘‘বিশ্বের অনেক সঙ্কটই এশিয়া, আফ্রিকা বা লাতিন আমেরিকার দেশগুলির কারণে তৈরি হয় না। কিন্তু তাদের সেই সঙ্কটের ফল ভোগ করতে হয়।’’