টেমসের তীরে আবার এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতর জয়ধ্বজা। ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী হতে চলেছেন ঋষি সুনক। তিনি ইনফোসিস প্রতিষ্ঠাতা এন আর নারায়ণমূর্তির জামাই।
অর্থমন্ত্রী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। গত জুলাই থেকে তিনি অর্থমন্ত্রকের অধীন ‘চিফ সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি’র দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। এর পর কার্যত নাটকীয় ভাবেই সরাসরি অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব পেলেন ৩৯ বছরের সুনক।
হ্যাম্পশায়ারের সাদাম্পটনে সুনকের জন্ম ১৯৮০ সালের ১২ মে। তাঁর ঠাকুরদা এবং ঠাকুমার ষাটের দশকে ভারতের পঞ্জাব থেকে প্রথমে পূর্ব আফ্রিকা, তারপর সেখান থেকে ইংল্যান্ডে পাড়ি দেন।
সুনকের বাবা যশবীর একজন চিকিৎসক। মা, ঊষা একজন ফার্মাসিস্ট। তিন ভাইবোনের মধ্যে সুনক সবথেকে বড়।
আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান উইনচেস্টার কলেজ থেকে পড়াশোনা সুনকের। তারপর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্কন কলেজ থেকে রাজনীতি, দর্শন ও অর্থনীতি নিয়ে উচ্চশিক্ষা।
মেধাবী সুনক স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন। তিনি ছিলেন একজন ফুলব্রাইট স্কলার।
ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক গোল্ডম্যান স্যাক্স-এ সুনক ছিলেন একজন অ্যানালিস্ট। পরে চাকরি ছেড়ে তিনি নিজের সংস্থা শুরু করেন।
২০০৯ সালে সুনকের বিয়ে হয় নারায়ণ মূর্তি এবং সুধা মূর্তির মেয়ে অক্ষতার সঙ্গে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তাঁদের আলাপ। দুই সন্তানের বাবা সুনক ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টিতেও জনপ্রিয় মুখ।
২০১৫ সালে তিনি রিচমন্ড কেন্দ্র থেকে প্রথম নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে থেরেসা মে-এর প্রধানমন্ত্রিত্বে ‘লোকাল গভর্নমেন্ট’-এর প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান সুনক। বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর গুরুত্ব আরও বাড়ে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় রদবদলের জেরে বাদ যায় আগের অর্থমন্ত্রী সাজিদ জাভিদের নাম। ট্রেজারি সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর সময় সাজিদ জাভিদের ‘নাম্বার টু’ হিসেবে কাজ করছিলেন সুনক।
সেই সাজিদ জাভিদের চেয়ারেই এ বার তাঁকে বসালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রীর পরে দ্বিতীয় ক্ষমতাধর হিসেবে ধরা হয় অর্থমন্ত্রীকেই।
ব্রিটিশ কনজারভেটিভ পার্টিতেও জনপ্রিয় মুখ ঋষি সুনক। নতুন প্রজন্মের নেতা হিসেবে দেশবাসীর মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বেশ ভাল। সরকারি মুখপাত্র হিসেবে টেলিভিশন-রেডিয়ো সাক্ষাৎকারে আস্থাভাজন সুনককেই পাঠাতেন বরিস জনসন। (ছবি: আর্কাইভ ও সোশ্যাল মিডিয়া)