‘নাপাম গার্ল’— তখন, এখন টুইটার থেকে নেওয়া।
৫০ বছর আগে তাঁর সেই ছবি দেখে চমকে উঠেছিল বিশ্ব। পিছনে আমেরিকার যুদ্ধ বিমান থেকে নাগাড়ে ফেলা হচ্ছে নাপাম বোমা। আর সামনে আদুর গায়ে প্রাণের ভয়ে ছুটছে এক কিশোরী। চিত্র সাংবাদিক নিক উটের তোলা সেই ছবি পরবর্তীতে ‘নাপাম গার্ল’ নামে খ্যাত হয়। আর ছবির সেই কিশোরী, কিম ফুক ফান টি বোমার ঘায়ে ক্ষতবিক্ষত হয়েছিলেন। ৫০ বছর পর কিম ফুক ফিরছেন স্বাভাবিক জীবনে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হল, যে দেশের হামলায় তাঁর এই অবস্থা হয়েছিল, সেই আমেরিকাতেই হল তাঁর ত্বকের চিকিৎসা।
১৯৭২-এর জুনে ভিয়েতনামে কিম ফুকের গ্রামে হামলা করে আমেরিকার যুদ্ধবিমান। মুহুর্মুহু নাপাম বোমা ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছিল ছোট্ট গ্রামটিকে। বোমা থেকে বাঁচতে আর পাঁচ জনের মতোই ছুট লাগিয়েছিল ৯ বছরের কিম ফুক। আদুর গায়ে কাঁদতে কাঁদতে সেই ছবিটি লেন্সবন্দি করেছিলেন নিক। সেই ছবিই তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল গোটা বিশ্বে। পরবর্তীতে এই ছবির জন্যই পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছিলেন নিক। আর কিম ফুকের সারা শরীরে বোমার ক্ষত!
১৯৯২-এ স্বামীর সঙ্গে ভিয়েতনাম ছাড়েন কিম ফুক। আশ্রয় নেন কানাডায়। সেই সময়ই আমেরিকার মিয়ামিতে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ হয় ত্বক বিশেষজ্ঞ জিল জোয়াবেলের। কিম ফুকের কাছে গোটা ঘটনা শোনার পর লজ্জিত জিল পুরো চিকিৎসাটিই বিনামূল্যে করার কথা জানান।
শুরু হয় চিকিৎসা। অতঃপর, ক্ষতবিক্ষত ত্বক সারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরা। সুস্থ হয়ে কিম ফুক বলছেন, ‘‘৫০ বছর পর এখন আমি মুক্ত। আমাকে আর যুদ্ধের ক্ষতচিহ্ন বয়ে বে়ড়াতে হবে না। আর নাপাম গার্ল নামে আমাকে কেউ ডাকবে না। আমি এক জন বন্ধু, এক জন দিদিমা, যে যুদ্ধের ক্ষত মুছে বিশ্বশান্তির আহ্বান জানাচ্ছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।