প্রতীকী ছবি।
রবিবার পর্যন্তও সব ঠিক চলছিল। কিন্তু, সোমবার সকাল থেকে মাত্র দু’জন কন্ট্রোলার সামলাচ্ছিলেন মায়ানমারের ইয়াঙ্গন শহরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)। সোমবার সন্ধ্যায় পাততাড়ি গুটিয়ে তাঁরাও বাড়ি চলে গিয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যায় ইয়াঙ্গন থেকে নোটাম (নোটিস টু এয়ারমেন) করে সমগ্র বিশ্বকে জানিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এটিসি।
সে দেশে সেনা অভ্যুত্থান প্রায় এক সপ্তাহ হয়ে গিয়েছে। প্রথম দিকে থমথমে ছিল ইয়াঙ্গন। কিন্তু, আস্তে আস্তে প্রতিবাদে নামছে দেশ। তার মধ্যেই দুম করে এটিসি পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয় মূলত সমস্যায় পড়েছে কলকাতা। ভারত থেকে পূবে যত আন্তর্জাতিক উড়ান যায়, তার একটা বড় অংশ ভারতের আকাশসীমা থেকে বেরিয়ে মায়ানমারের আকাশসীমায় ঢোকে। কলকাতার এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে ইয়াঙ্গন এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। উল্টোপথেও একই ভাবে ইয়াঙ্গন এটিসি ছাড়লে তবে কলকাতার এটিসি ধরে। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, দুই দেশের মধ্যে এরকম আটটি রুট রয়েছে।
কলকাতা এটিসি-র এক কর্তার কথায়, সোমবার সন্ধ্যার পরে যে সব বিমানকে কলকাতা থেকে মায়ানমারের দিকে ছাড়া হচ্ছে, তাদের মাঝের দূরত্ব ১০ মিনিটের জায়গায় বাড়িয়ে ১৫ মিনিট করে দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া, আটটি-র জায়গায় পাঁচটি রুট ব্যবহার করা হচ্ছে। কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বিমানগুলি এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই পূবের আকাশ দিয়ে উড়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এটিসি কর্তার কথায়, ‘‘আমরা বিমান ছাড়ার আগে পাইলটকে বলে দিচ্ছি, কোনও ভাবে যদি কাছের ব্যাঙ্কক বা লাওস বা চিনের কুনমিং-এর সঙ্গে তারা যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে, ভাল। নয়তো এটিসি-র সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়াই নির্দিষ্ট উচ্চতায় নির্দিষ্ট গতিতে পূবের দিকে উড়ে যেতে।’’
ঠিক একই পদ্ধতিতে পূব থেকে উড়ে আসা বিমানগুলিও একটি উচ্চতায়, একই গতিতে কলকাতার আকাশে এসে ঢুকছে। কর্তার কথায়, ‘‘এই ধরনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট জরুরি পরিকল্পনা থাকে। কিন্তু, হংকং, চিন, জাপান, তাইল্যান্ড থেকে ওঠানামা করা আন্তর্জাতিক উড়ানের সংখ্যা এখন অনেক কম বলেই সেটা কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে। নয়তো আকাশ পথে এতক্ষণে ট্রাফিক জ্যাম লেগে যেতে পারত।’’