ভূমিকম্পের জেরে মায়ানমারের মান্দালয়ে ধসে গিয়েছে একটি বাড়ি। ছবি: রয়টার্স
মায়ানমারে শুক্রবার যে সময় ভূমিকম্প হয়েছিল, তখন দেশের মসজিদগুলিতে চলছিল জুম্মার নমাজ। রমজানের মাসে সেই নমাজ পড়তে পড়তে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭০০ জন। এমনটাই জানাল মায়ানমারের এক মুসলিম সংগঠন। শুক্রবার মায়ানমারে যে ভূমিকম্প হয়, রিখটার স্কেলে তার মাত্রা ছিল ৭.৭। উৎসস্থল ছিল মান্দালয়ের কাছে। ‘স্প্রিং রেভলিউশন মায়ানমার মুসলিম নেটওয়ার্ক’ কমিটির সদস্য টুন কি জানিয়েছেন, শক্তিশালী সেই ভূমিকম্পে ভেঙে গিয়েছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের ৬০টি মসজিদ।
এখনও পর্যন্ত পাওয়া সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মায়ানমারের ভূমিকম্পে মারা গিয়েছেন অন্তত ১,৭০০ জন। মুসলিম সংগঠন যে ৭০০ জনের মৃত্যুর কথা বলছে, সেই সংখ্যা এই সরকারি পরিসংখ্যানের মধ্যে নথিবদ্ধ হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। স্থানীয় নিউজ় পোর্টাল ইরাওয়াড্ডিতে বেশ কিছু ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে (আনন্দবাজার ডট কম তার সত্যতা যাচাই করেনি)। সেখানে দেখা গিয়েছে, ভূমিকম্পের জেরে বেশ কিছু মসজিদ ভেঙে পড়ে যাচ্ছে। লোকজন দৌড়োদৌড়ি করছেন। মুসলিম সংগঠনের সদস্য টুন জানিয়েছেন, যে মসজিদগুলি ভেঙে পড়েছে, সেগুলির বেশির ভাগই বহু বছরের পুরনো।
সোমবার মায়ানমারে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আরও কয়েক জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। সেনা সরকার জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ১,৭০০ ছাড়িয়েছে। সেনা সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জ় মিন তুন সরকারি চ্যানেল এমআরটিভিকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পে ৩,৪০০ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবারের পর থেকে ৩০০ জনের খোঁজ মিলছে না। তবে এর বেশি কিছু তিনি বলেননি।
শুক্রবার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরে বেশ কয়েকটি আফটার শক হয়েছে মায়ানমারে। কম্পনের জেরে দুমড়েমুচড়ে গিয়েছে হাজার হাজার বাড়ি, ইমারত, বিদ্যুতের খুঁটি, মোবাইলের টাওয়ার। রাস্তাঘাটেও ফাটল ধরেছে। ভেঙে পড়েছে বেশ কিছু সেতু। ফলে বহু এলাকা যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বাঁধগুলিও হয়ে গিয়েছে নড়বড়ে। ফলে বন্যার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত মায়ানমারে এই ভূমিকম্প প্রশাসনকে আরও বিপাকে ফেলেছে। প্রতিবেশী তাইল্যান্ডেও পড়েছে ভূমিকম্পের প্রভাব। সেখানে একটি নির্মীয়মাণ বহুতল ধসে গিয়েছে। ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। ওই দেশে ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন।