মায়ানমারে নিরস্ত্র আন্দোলনকারীদের উপর সেনাবাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা করল আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বললেন, ‘‘মায়ানমারে সেনারা ভয়াবহ কাণ্ড ঘটিয়েছে। নির্বিচারে হত্যা করেছে অজস্র মানুষকে। ঘটনাটি মারাত্মক।’’
শনিবার মায়ানমারে সেনাবাহিনীর গুলিতে ১০৭ জন আন্দোলনকারী নিহত হন। রিপোর্ট বলছে, নিহতের মধ্যে অন্তত ৭ জন নাবালক ও শিশু রয়েছে। আমেরিকার পাশাপাশি এই ঘটনার সমালোচনা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলিও। তারা বলেছে, ‘‘এ ধরনের হিংসাত্মক ও নারকীয় হত্যাকাণ্ড কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না।’’
শনিবার ছিল মায়ানামারের বার্ষিক সেনা দিবস। সে দিনই সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় মায়ানমারের জুন্টা সরকার। ইইউ বলেছে, ‘‘উদ্যাপনের বদলে বার্ষিক সেনা দিবসকে লজ্জা এবং আতঙ্কের দিনে পরিণত করেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী।’’ ডেলওয়্যারে নিজের প্রদেশ থেকে এ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে বিবৃতি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনও। মায়ানমারের পরিস্থিতি প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাইডেন বলেন, ‘‘আমার কাছে যে রিপোর্ট এসেছে, তার ভিত্তিতে বলতে পারি, এটা ভয়াবহ আর মারাত্মক ঘটনা। এতগুলো মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে সম্পূর্ণ অকারণে।’’
গত ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমারের জননেত্রী আং সাং সুকিকে আটক করে মায়ানমারে ক্ষমতা দখল করে জুন্টা। তার পর থেকে মায়ানমারের আন্দোলনকারীদের মৃত্যুর সংখ্যা ৪২৩ ছুঁল।
২৪ ঘণ্টা আগেই এ বিষয়ে যৌথভাবে বিবৃতি জারি করেন আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়া-সহ ১২টি দেশের সেনাপ্রধান। প্রকাশ্যে মায়ানমারের সেনা বাহিনীর নিন্দা করে তাঁরা বলেন, ‘‘পেশাদার সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক একটি নীতি মেনে চলে। যেখানে দেশবাসীকে সুরক্ষিত রাখাই তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের ক্ষতি করা নয়।’’ একসঙ্গে একটি বিষয়ে ১২ দেশের সেনা প্রধানের এই যৌথ বিবৃতি বেনজির ঘটনা। ওই বিবৃতিতে সেনা হিসাবে মায়ানমার বাহিনীর নীতিগত যাথার্থ ও পেশাদারিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁরা বলেন, ‘‘মায়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীকে আমরা বলব দ্রুত হিংসা থামিয়ে দেশবাসীর মধ্যে নিজেদের হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা করুক তারা।’’
রবিবার মায়ানমার মান্দালয়ে সশস্ত্র সেনাবাহিনীর গুলিতে মৃতদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মায়ানমারের জুণ্টা বাহিনীর নিন্দায় সরব হয়েছে আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রপ্রধানরাও।