সুফি সাধক শাহ পরাণের মাজার। ছবি: সংগৃহীত।
সিলেটের জনপ্রিয় সুফি সাধক শাহ পরাণের মাজারে গান বাজনা বন্ধ হল। শুক্রবার দুপুরে কয়েকশো লোক এই মাজারের সামনে জমায়েত ও মানববন্ধন করে গান-বাজনার মতো ‘অসামাজিক ও অনৈতিক’ ধর্মবিরোধী কাজ বন্ধের দাবি জানান। বিরাট এই জমায়েতে বহু মাদ্রাসার ছাত্র অংশ নেয়। গান-বাজনা বন্ধ না হলে ‘খারাপ কিছু’র হুমকি দেওয়া হয়। এর পরে খাদেমরা স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করে গান-বাজনা এবং তার সঙ্গে গাঁজা-মাদকের ব্যবহার বন্ধ বলে ঘোষণা করেন।
শাহ পরান মাজারের খাদেম সৈয়দ কাবুল আহমদ বলেন, “মাজারের বাৎসরিক উরস অনুষ্ঠানে এ বার থেকে আর গান-বাজনা হবে না। প্রতি মঙ্গলবার মাজারে সুফি গানের যে অনুষ্ঠান হয়, তাও বন্ধ করে দেওয়া হল। খাদেম জানাতে ভোলেননি, “কারও চাপে নয়, নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা গান-বাজনা বন্ধ করেছি।”
বাংলাদেশে গত এক মাসে গ্রামেগঞ্জে একটার পর একটা মাজারে কট্টরপন্থীরা হামলা চালাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন শনিবার দুপুরে বলেন, “ভিন্নপন্থীদের মসজিদ, মন্দির বা মাজার ভাঙা গর্হিত কাজ। যারা এ সমস্ত কাজ করে, তারা মানবতার শত্রু। তারা ক্রিমিনাল।” হেফাজতে ইসলামির এই নেতা বলেন, “এদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের জানালে মুহূর্তের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ধর্ম উপদেষ্টা জানান, “দুর্গাপুজো নিয়ে শীঘ্রই কমিটিগুলির সঙ্গে তাঁদের মিটিং হবে, কমিটিগুলিকে বলা হবে স্থানীয় মাদ্রাসা ছাত্রদের সম্পৃক্ত করতে। তারাই মণ্ডপগুলি
পাহারা দেবে।”
প্রধান উপদেষ্টার সহায়ক পদে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহফুজ় আলম এ দিন ফেসবুক পোস্টে মাজার ভাঙার নিন্দা করে মন্তব্য করেছেন, “যারা এই কাজ করছে, তারা বাংলাদেশের বিরোধী। কঠোর হাতে তাদের মোকাবিলা করা হবে।”
নজর কেড়েছে ফেসবুকে একটি কর্মসূচি। ১১ তারিখ, বুধবার রাত সাড়ে নটায় সকলকে গুলিস্তানে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কর্মসূচি হল, ‘ঢাকার গুলিস্তানে গোলাপ শাহ মাজার ভাঙা’। আবদুল্লা আলিফ নামে কোনও এক জন এই কর্মসূচি ঘোষণা করে জানিয়েছেন— গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার একটি অধার্মিকদের আস্তানা। ইহা উৎখাত করা অতীব জরুরি।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসস্থান গণভবনকে গণঅভ্যুত্থানের জাদুঘর করবে অন্তর্বর্তী সরকার। শনিবার গণভবন পরিদর্শনের পরে তথ্য ও সম্প্রচার দফতরের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি তাঁরা ক্যাবিনেটে অনুমোদন করিয়েছেন। কী ভাবে কী করা যায়, তার জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করা হবে। জাদুঘর বিশেষজ্ঞ, স্থাপত্যের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তারাই কমিটিতে থাকবেন। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকেও জাদুঘর বিশেষজ্ঞ বা এমন অভ্যুত্থানের স্মৃতি জাদুঘর করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদেরও পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে।