নিজস্ব চিত্র।
মোল্লা আব্দুল গনি বরাদর নন, কাবুলে পরবর্তী তালিবান সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারেন মোল্লা মহম্মদ হাসান আখুন্দ। তালিবানের একটি সূত্র উদ্ধৃত করে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবার আখুন্দের নেতৃত্ব নয়া সরকার দায়িত্ব নিতে পারে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কাতারের দোহায় শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়া তালিবান নেতৃত্বের বড় অংশই সরকারে থাকবেন না বলে খবর।
নয়া সরকারের উপ-প্রধান হিসেবে বরাদর এবং আর এক প্রথম সারির তালিবান নেতা মোল্লা আব্দুস সালাম দায়িত্ব নেবেন। দু’দিন ধরে টানাপড়েনের পর পাকিস্তানের মধ্যস্থতাতেই তালিবান প্রধান হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদা এই রফাসূত্র তৈরি করেছেন বলে ওই সূত্রে জানা গিয়েছে। নয়া সরকারে পাক মদতে পুষ্ট হক্কানি নেটওয়ার্ক একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ দাবি করে। কিন্তু বরাদর এবং তালিবান প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মহম্মদ ইয়াকুব সরাসরি হক্কানি আধিপত্যের বিরোধিতায় সরব হন।
২০০১ সালে আমেরিকার হানায় কাবুলে তালিবান সরকারের পতনের পরে পাকিস্তানের বালুচিস্তানে গঠিত তালিবান ‘কোয়েটা সুরা’র নেতৃত্বে ছিলেন আখুন্দ। বরাদরের মতোই তাঁকেও ২০১০ সালে পাকিস্তান প্রশাসন গ্রেফতার করেছিল। পরবর্তী কালে তিনি মুক্তি পান। প্রায় দু’দশক ধরে আখুন্দজাদার ঘনিষ্ঠতম সহযোগী হিসেবে পরিচিত আখুন্দ তালিবানের শান্তি আলোচনা বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘রেহবারি সুরা’রও প্রধান ছিলেন।
অন্যদিকে, আব্দুস সালাম দু’দশক আগে পাকিস্তানে প্রথম তালিবান সরকারের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ২০০১ সালে আমেরিকা সেনার কাবুল দখলের সময় তিনি পাকিস্তানে ছিলেন। তাঁকে গ্রেফতার করে আমেরিকার হাতে তুলে দেয় পাকিস্তান। এর পর দীর্ঘ সময় তাঁকে কিউবার কুখ্যাত ‘গুয়ান্তনামো বে’ কারাগারে বন্দি রেখেছিল আমেরিকা।
নয়া সরকারে হাসানকে ‘রইস-ই-জামহুর’ বা ‘রইস-ই-ওয়াজারা’ অর্থাৎ রাষ্ট্রপ্রধানের পদ দেওয়া হতে পারে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী হতে পারেন নিহত তালিবান প্রতিষ্ঠাতা ওমরের ছেলে ইয়াকুব। অন্যদিকে, হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা সিরাজউদ্দিন হক্কানি পেতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ। প্রসঙ্গত, এর আগে তালিবানের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছিল, নয়া সরকারের নেতৃত্বে দেবেন ‘আমির-উল-মোমিনিন’। দ্বিতীয় খলিফা উমর এই উপাধি গ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীকালে খিলাফত অনুসারী মুসলিম শাসকদের অনেকে ওই উপাধি ব্যবহার করেছেন। সেই আমির পদে কে আসীন হবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়।