নিহত হিজ়বুল্লা কমান্ডার মহম্মদ নামেহ নাসের। ছবি: সংগৃহীত।
দক্ষিণ লেবাননে ইজ়রায়েলি বিমান হানায় নিহত হলেন ইরানপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজ়বুল্লার শীর্ষ কমান্ডার মহম্মদ নামেহ নাসের। জুন মাসের গোড়ায় ইজ়রায়েলি হানায় হিজবুল্লার শীর্ষ সামরিক নেতা তালেব সামি আবদুল্লা নিহত হয়েছিলেন। তার পরে আবার সংগঠনের কোনও সর্বোচ্চ সারির নেতার মৃত্যু হল।
বুধবার রাতে ওই বিমানহানার পর থেকেই ধারাবাহিক রকেট হামলা শুরু করেছে হিজ়বুল্লা বাহিনী। তাদের নিশানায় ইজ়রায়েলি ভূখণ্ড। প্রতিরক্ষা বিশারদদের একাংশের মতে, আয়রন ডোম-সহ ইজ়রায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলিতে যত ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, তার চেয়ে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের সংখ্যা বেশি। সে কারণে তাদের হামলা পুরোপুরি ঠেকানো ইজ়রায়েলি সেনার এয়ার ডিফেন্স ইউনিটগুলির পক্ষে সম্ভব না–ও হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে আরও জোরাল প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটতে পারে তেল আভিব। প্রসঙ্গত, রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস জুন মাসের শেষ পর্বে জানিয়েছিলেন, গাজ়ার লড়াই এ বার লেবাননে সম্প্রসারিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নাসেরের মৃত্যুর জেরে কার্যত পশ্চিম এশিয়া জুড়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা।
হিজ়বুল্লা কথার অর্থ ‘আল্লার দল’। ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের শিয়া মুসলিমদের এই দল গত বছর গাজ়া ভূখণ্ডে লড়াই শুরু পর থেকেই ধারাবাহিক ভাবে হামলা চালাচ্ছে ইজ়রায়েলের উপর। ১৯৮০-র দশকে লেবাননের গৃহযুদ্ধের মধ্যেই হিজ়বুল্লা গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। ১৯৯২ সাল থেকে এই গোষ্ঠীর নেতৃত্বে রয়েছেন ধর্মগুরু এবং রাজনৈতিক নেতা হাসান নাসরুল্লা।
প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের চেয়ে লেবাননের হিজবুল্লার যোদ্ধার সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। অস্ত্রসম্ভারেও অনেক এগিয়ে লেবাননের শিয়া গোষ্ঠীটি। নানা ক্যালিবার এবং পাল্লার রকেটের পাশাপাশি ইরানের মদতপুষ্ট এই সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে রয়েছে ‘গাইডেড’ ক্ষেপণাস্ত্রও! রয়েছে শক্তিশালী ড্রোন। পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের দাবি, ইরানের সামরিক প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে বেশ কয়েকটি পুরনো রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের আধুনিকীকরণের কাজও সেরে ফেলেছে হিজবুল্লা। ফলে সর্বাত্মক যুদ্ধ বাধলে গোটা পশ্চিম এশিয়া এমনকি, ইউরোপেও তার আঁচ পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রাষ্ট্রপুঞ্জের।