জিন-মিশেল শেরবাক। ফাইল চিত্র ।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার আগ্রাসনকে সমর্থন করেন না ছেলে। সেই কারণে তাঁকে ত্যাজ্যপুত্র করলেন মা। রাশিয়ান অভিনেতা এবং মডেল জিন-মিশেল শেরবাক প্রথম থেকেই ইউক্রেনের উপর রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বারবার নেটমাধ্যমে সরবও হয়েছেন তিনি। কিন্তু ছেলের এই মনোভাব মেনে নিতে পারেননি পুতিনের একনিষ্ঠ সমর্থর মা। প্রকাশ্যে ছেলের নিন্দাও করেছেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ছেলের চিন্তাভাবনাকে আমল দিতে না পেরে সরাসরি তাঁকে ত্যাজ্যপুত্র করলেন মা।
শেরবাক জানান, সম্প্রতি নেটমাধ্যমে কিভ-মস্কো সঙ্ঘাত নিয়ে নিজের মত প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সেখানে রাশিয়ার কড়া সমালোচনাও করেন। এ-ও জানান যে তিনি শীঘ্রই রাশিয়া ছেড়ে চলে যাবেন। এর পরই চটে যান তাঁর মা। নেটমাধ্যম থেকে ‘ব্লক’ করেন ছেলেকে।
একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টের মাধ্যমে শেরবাক জানান, তিনি তাঁর মাকে কিছু টাকা এবং একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন। এর পরই দ্রুত উত্তর আসে তাঁর মায়ের কাছে থেকে।
উত্তরে মা লেখেন, ‘তোমার টাকা আমার দরকার নেই। তুমি টাকা দিলে আমি তা ফেরত পাঠাব। আমি নিজের মাতৃভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা মানুষদের সঙ্গে কোনও রকম যোগাযোগ রাখি না। আমি আন্তরিকভাবে চাই যে তুমি যেন তোমার রাশিয়ার পাসপোর্ট ফেরত দাও এবং এই দেশ ছেড়ে যে দিকে খুশি চলে যাও।’
শেরবাকের মা আরও লেখেন, ‘আজ থেকে তুমি আর আমার ছেলে নও। আমার পরিবারে কোনও দেশদ্রোহী থাকতে পারে না।’
মায়ের এই বার্তার পর ভেঙেও পড়েন শেরবাক। পাল্টা জানান যে, তিনি নিজের সন্তানদের সঙ্গে কখনও তাঁর মায়ের মতো আচরণ করবেন না। তবে তাঁর মা যখনই তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন, তিনি কথা বলবেন বলেও উল্লেখ করেন শেরবাক।
এর আগেও একবার ছেলের সমালোচনা করে ফেসবুকে বার্তা দেন শেরবাকের মা। তিনি লিখেছিলেন, ‘‘তুমি একজন দেশদ্রোহী এবং আমি ঠিক করে নিয়েছি যে আমি তোমাকে ব্লক করব।’’
এর পরই ছেলেকে ফেসবুক থেকে ব্লক করেন শেরবাকের মা।
শেরবাক বর্তমানে জার্মানিতে রয়েছেন। একটি সংবাদ সংস্থার সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি এ-ও বলেন যে, ‘‘ইউক্রেনে আমার অনেক বন্ধু রয়েছে। তারা আমাকে জানিয়েছিল যে রাশিয়া কী ভাবে নির্বিচারে ইউক্রেনের উপর ক্ষেপণাস্ত্রের হামলা চালাচ্ছে। রুশ সংবাদ মাধ্যমগুলিও রাশিয়ার সমর্থনে নির্লজ্জ প্রচার চালাচ্ছিল। আর সেই কারণেই আমি ওই দেশ ছেড়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিই।’’
আর সেই কারণে তিনি মস্কো আগ্রাসনের পর থেকেই রাশিয়ার নিন্দা করে নেটমাধ্যমে নিয়মিত যুদ্ধবিরোধী পোস্ট করতে শুরু করেন বলেও শেরবাক জানান।