US Presidential Election 2024

‘ঠিকঠাক ভোট না দিলে মাসুল দিতে হবে মেয়েদেরই’

আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে সব বিষয় ভোটারদের ভাবাচ্ছে, তার মধ্যে অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, অনুপ্রবেশকারী সমস্যা, সীমান্ত সমস্যার সঙ্গে রয়েছে গর্ভপাতের অধিকারের প্রসঙ্গটিও।

Advertisement

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়

বস্টন শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ০৯:২০
Share:

আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নিবার্চনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবাম। মিশিগানের একটি প্রচারসভায়। শনিবার ছবি: পিটিআই।

আমেরিকান ভোটার, বিশেষত পুরুষ ভোটারদের কাছে এক আবেগঘন আর্জি জানালেন প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা। বললেন, ‘‘এই নির্বাচনে যদি ঠিকমতো ভোট দেওয়া না হয়, তার মাসুল দিতে হবে আপনাদেরই স্ত্রী, মেয়ে ও মা-কে।’’

Advertisement

আমেরিকার আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যে সব বিষয় ভোটারদের ভাবাচ্ছে, তার মধ্যে অর্থনীতি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, অনুপ্রবেশকারী সমস্যা, সীমান্ত সমস্যার সঙ্গে রয়েছে গর্ভপাতের অধিকারের প্রসঙ্গটিও। ১৯৭৩ সালে ‘রো ভার্সেস ওয়েড’ মামলার মাধ্যমে মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকার সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি পায়। কিন্তু ২০২০ সালে আমেরিকান সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলার রায় খারিজ করে দিয়ে গর্ভপাতের আইন প্রাদেশিক সরকারের হাতে তুলে দেয়। অর্থাৎ যে কোনও কারণে এক মহিলার গর্ভপাতের প্রয়োজন হলে তা করা যাবে কি না, তা নির্ভর করবে তিনি কোন প্রদেশের বাসিন্দা তার উপরে। যে সব প্রদেশে রিপাবলিকান সরকার রয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই অত্যন্ত কড়া গর্ভপাত আইন নিয়ে এসেছে। ভ্রূণের বয়স ছ’সপ্তাহ হয়ে গেলেই আর গর্ভপাত করা যাবে না, এ রকম ভয়ঙ্কর কড়া আইন নিয়ে এসেছে জর্জিয়া, আইডাহো, সাউথ ক্যারোলাইনা, লুইজ়িয়ানার মতো ১২টি প্রদেশ।

সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তের যথেষ্ট প্রতিকূল প্রভাব পড়েছে মহিলা ভোটারদের উপরে। মহিলাদের সাংবিধানিক অধিকারকে প্রাদেশিক সরকারের হাতে দেওয়ার ‘ফল’ বোঝা গিয়েছিল ২০২২-এর অন্তর্বর্তী নির্বাচনেই। সাতটি রাজ্যে গর্ভপাতের অধিকার আইনি করার জন্য ব্যালটে আসে এবং পাশ হয়ে যায়। অপ্রত্যাশিত ভাবে এদের মধ্যে কয়েকটি রাজ্য রাজনৈতিক ভাবাদর্শে কনজ়ারভেটিভ। যা থেকে স্পষ্ট, রিপাবলিকান মহিলা ভোটারদের
কাছে গর্ভপাতের অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যে সব ভোটার এখনও কাকে ভোট দেবেন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, সেই ‘আনডিসাইডেড ভোটার’দের পাশে পেতে তাই গর্ভপাতের আইনকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে ডেমোক্র্যাট দলটি।

Advertisement

যা স্পষ্ট হয়ে গেল গত কাল। মিশিগানের কালামাজ়ুতে গত কাল ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী, বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের প্রচারসভা ছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশের একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার স্ত্রী মিশেল। সাধারণত প্রচারসভায় দেখা যায় না মিশেলকে। স্বামীর সঙ্গে উপস্থিত থাকলেও প্রচারে নামেন না। কিন্তু গত কাল মঞ্চে উঠেই জোর গলায় গর্ভপাতের আইনি অধিকারের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন তিনি। বলেন, ‘‘মেয়েদের জীবনেরও যে গুরুত্ব রয়েছে, সেটা আশা করি পুরুষেরা এ বার বুঝতে পারবেন।’’ এখানেই না থেমে মিশেল আরও বলেন, ‘‘যখন দেখবেন অস্ত্রোপচারের টেবিলে শুয়ে রয়েছেন আপনার স্ত্রী, তাঁর শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে, আপনার তখন মনে হবেই, আগে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ কেন আপনাদের দেওয়া হয়নি!’’

একটা সাম্প্রতিক জনমত সমীক্ষা বলছে, আসন্ন নির্বাচনে ৪০ বছরের কম বয়সি মহিলাদের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এই গর্ভপাতের অধিকার। রিপাবলিকান প্রদেশ টেক্সাসে গর্ভপাত-বিরোধী আইন অত্যন্ত কড়া। এই প্রদেশেও নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে কমলা হ্যারিস বারবার গর্ভপাতের অধিকারের কথা বলেছেন।

প্রসঙ্গত, গর্ভপাতের অধিকার বিষয়ে ট্রাম্প এখনও তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement