ছবি রয়টার্স।
গত কাল ‘বিতর্কিত’ সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে ডাচেস অব সাসেক্স আজই কানাডা ফিরে গিয়েছেন। সেখানে ছেলে আর্চির সঙ্গে আপাতত থাকবেন তিনি। গত কাল লন্ডনে এসে মেগান এবং তাঁর স্বামী, রাজকুমার হ্যারি ‘সিনিয়র রয়্যালস’–এর খেতাব ব্যবহার না করার কথা ঘোষণা করেছেন। তার পর মেগানের দ্রুত চলে যাওয়ায় রাজপরিবারের অনেকেই স্তম্ভিত।
কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে ন্যানির কাছে আর্চিকে রেখে এসে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন হ্যারি-মেগান। তার পরেই ফিরে গেলেন মেগান। ভবিষ্যতে রাজপরিবারে তাঁর কী ভূমিকা হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে রয়ে গিয়েছেন হ্যারি। রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ এবং যুবরাজ চার্লসের সঙ্গে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলছেন।
গত কাল রাজপরিবারের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, রানি তাঁদের সিদ্ধান্তে ব্যথিত। হ্যারি-মেগান এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে রাজপরিবারের কোনও সদস্যের সঙ্গে আলোচনা করেননি বলেই দাবি। খোদ চার্লস এবং হ্যারির দাদা, রাজকুমার উইলিয়াম এই ঘোষণার কাগজপত্র হাতে পেয়েছেন গোটা পৃথিবীকে জানানোর ঠিক দশ মিনিট আগে।
তবে দম্পতির এই সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছেন ব্রিটিশ জনতার একটি বড় অংশ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, হ্যারি-মেগানের পাশে রয়েছে ৪৫% মানুষ আর বিরোধিতা করেছেন ২৬ শতাংশ। যুবরাজ চার্লসের এস্টেট থেকে যে উপার্জন হত তাঁদের, সেটা এখনও হ্যারি-মেগানের নেওয়া উচিত কি না, সে ব্যাপারে ৬৩% জানিয়েছেন, ওই অর্থ তাঁদের আর না নেওয়াই উচিত। ১৩% বলছেন, নেওয়া উচিত।
হ্যারিরা কালই জানিয়েছেন, রাজপরিবারের আর্থিক সুযোগসুবিধা ছেড়ে সাধারণ মানুষের মতো উপার্জনের চেষ্টা চালাবেন তাঁরা। কী ভাবে তা হবে, প্রশ্ন উঠছে। হ্যারি তাঁর মা, প্রাক্তন যুবরানি ডায়ানার এস্টেট থেকে ৭০ লক্ষ পাউন্ড এবং তাঁর ঠাকুরমার মায়ের (রানির মা) থেকে ৩০ লক্ষ পাউন্ডের সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছেন। মেগানও অভিনয়ের সূত্রে ব্যক্তিগত ৩০ লক্ষ পাউন্ডের সম্পত্তির অধিকারী। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই দম্পতি এর পরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে পারেন, যেমন অবসরপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীরা করে থাকেন। দু’জনে মিলে বই লিখেও রোজগার করতে পারেন, যেমনটা করেছেন বারাক ও মিশেল ওবামা। ‘সাসেক্স রয়্যাল’ ব্র্যান্ডনেম দিয়ে পণ্য বিপণনেও যেতে পারেন। মেগানের আবার অভিনয়ের জগতে ফিরে যাওয়ার জল্পনা তো রয়েইছে।
২৪ লক্ষ পাউন্ড খরচ করে কিছু দিন আগে উইনসর এস্টেটের ফ্রগমোর কটেজ সংস্কার করিয়েছিলেন হ্যারি-মেগান। সেখানেই থাকতেন তাঁরা। সংস্কারের অর্থ এসেছিল সাধারণ করদাতাদের কাছ থেকেই। এখন কটেজ নিয়ে কী করবেন তাঁরা, প্রশ্ন তা নিয়েও। কারণ উত্তর আমেরিকা ও ব্রিটেনে মিলিয়ে মিশিয়ে থাকার কথা ভেবেছেন তাঁরা। তা হলে বেশির ভাগ সময়ে কি খালিই থাকবে ফ্রগমোর কটেজ? উত্তরের অপেক্ষায় অনেকেই।