৫৬০টি মৃতদেহের দেহাংশ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে মেগান হেস। প্রতীকী ছবি।
ঠিক যেন লম্বা সফরের আগে স্টেশন থেকে কেনা কোনও হাড় হিম করা রহস্য রোমাঞ্চের বই। আমেরিকার কলোরাডোর মন্ট্রোসের মেগান হেসের ঘটনাটি খানিক তেমনই। ‘সানসেট মেসা’ নামের প্রাক্তন সৎকার ভবনের মালিক এই মহিলার বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৫৬০টি মৃতদেহের দেহাংশ কেটে বিক্রি করে দিয়েছে সে। দেহ কাটার আগে মৃতদের পরিজনকে অঙ্গ দানের ভুয়ো ফর্মে সই করাত মেগান। তাঁরা ভাবতেন, মানুষের উপকারে লাগছে তাঁদের প্রিয়জনের দেহ। আদতে গল্পটি সম্পূর্ণ আলাদা। এমনকি, ভুয়ো শেষকৃত্যের জন্য ১০০০ ডলার করেও নিত মেগান।
প্রতিটি রহস্য গল্পে ভিলেন কখনও একা থাকে না, থাকে এক জন সহকারী। এ ক্ষেত্রেও মেগানের সহকারী ছিল তার মা শার্লি কখ। তার কাজ ছিল, দেহগুলো প্রয়োজন অনুসারে কেটে টুকরো টুকরো করা। বিচারে মেয়ে মেগানের হয়েছে ২০ বছরের জেল, মা শার্লির ১৫ বছরের। বিচারপতির দাবি, আমেরিকার ইতিহাসে দেহাংশ নিয়ে এমন অপরাধ বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, গত ২০১৬ সাল থেকেই আমেরিকায় বেআইনি দেহাংশ বিক্রি নিয়েই তদন্ত শুরু করেছিল ফেডারেল বুরো অব ইনভেস্টিগেশন। তদন্তে পিছিয়ে ছিল না বিখ্যাত একটি সংবাদমাধ্যমও। তাদেরই প্রকাশিত একটি রিপোর্টের কয়েক সপ্তাহ পরেই ‘সানসেট মেসা’য় তল্লাশি চালায় এফবিআই। তার পরেই ধরা পড়ে মা-মেয়ের এই কীর্তি।
তদন্তে জানা গিয়েছে, কমপক্ষে ২০০টি পরিবার মেগানের প্রতারণার শিকার হয়েছে। শেষকৃত্যের নামে বিভিন্ন জনের দেহাংশের টুকরো ও ছাই তাদের দিয়েছে মেগান। আমেরিকায় হৃদ্পিণ্ড, কিডনি ও টেন্ডন বিক্রি করা বেআইনি। তবে, মাথা, হাত-পা ও মেরুদণ্ডের ক্ষেত্রে স্পষ্ট কোনও নিয়ম নেই। সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছিল মেগানরা। তাদের কাছ থেকে যে শল্যচিকিৎসার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলি দেহাংশ কিনেছিল তারা জানত না এগুলো প্রতারণার ফসল।
মেগানের আইনজীবী জানিয়েছেন, সে মানসিক ভাবে অসুস্থ। ১৮ বছর বয়সে মস্তিষ্কে আঘাত লাগে তার, সমস্যা সেখান থেকেই। যদিও তা মানতে চাননি তার দ্বারা প্রতারিত মানুষেরা। এরিন স্মিথ বলে এক জন জানান, মেগান ও শার্লি তাঁর মায়ের দেহ থেকে কাঁধ, হাঁটু ও পা কেটে বিক্রি করে দিয়েছে। তাদের উপযুক্ত শাস্তি হয়েছে বলেই মনে করছেন এরিন।