মারওয়া এলসলেহদার। পুরুষ-শাসিত সমুদ্রে মিশরের প্রথম মহিলা ক্যাপ্টেন হিসাবে জাহাজ নিয়ে ভেসে পড়েছিলেন তিনি।
ছোট থেকেই সমুদ্র ভাল লাগত মারওয়ার। ভালবাসতেন সাঁতার কাটতে। সেই ভাল লাগা থেকেই স্কুলের গণ্ডি পেরনোর পর তিনি চেয়েছিলেন সমুদ্র নিয়ে পড়াশোনা করতে।
২০১৩ সালে আরব অ্যাকাডেমি ফর সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড মেরিটাইম ট্রান্সপোর্ট থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তিনিই ছিলেন এই বিভাগের প্রথম মহিলা স্নাতক।
এর পর কারডিফ মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এ স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও অর্জন করেছেন। তবে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে ততটাও হইচই হয়নি যতটা হয়েছিল স্নাতক হওয়া নিয়ে।
কারণ ওই বিভাগে তিনিই ছিলেন প্রথম মহিলা পড়ুয়া। ছেলেদের মাঝে একমাত্র মহিলা হিসাবে ক্লাস করতে অনেক গঞ্জনা, ব্যঙ্গ সহ্য করতে হয়েছিল তাঁকে। যৌন বিদ্বেষমূলক মন্তব্যও শুনতে হয়েছিল একাধিকবার।
তা সত্ত্বেও পিছু হঠেননি তিনি। পড়াশোনা সম্পূর্ণ করে দেশের প্রথম মহিলা জাহাজ ক্যাপ্টেন হয়ে উঠেছেন। পাশে অবশ্যই পেয়েছিলেন পরিবারকে।
তিনি যখন ওই বিভাগে স্নাতক স্তরের পড়াশোনার জন্য আবেদন করেছিলেন তখন শুধুমাত্র ছেলেদেরই ওই বিভাগে ভর্তি নেওয়া হত। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেননি। পরে আদালতের সাহায্য নিয়ে ওই বিভাগে ভর্তি হন তিনি।
ক্লাসে ১২০০ পড়ুয়ার মাঝে তিনিই ছিলেন একমাত্র মহিলা। একটা সময় ক্লাসে ঢোকাই দায় হয়ে পড়েছিল তাঁর সামনে। কিন্তু জাহাজ নিয়ে সমুদ্রে ভেসে বেড়ানো যাঁর স্বপ্ন, সহজে হার মানার পাত্রী তিনি নন। মারওয়াও হার মানেননি।
২০১৫ সালে তিনি মিশরের প্রথম মহিলা জাহাজ ক্যাপ্টেন হন। সে সময় সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। মিশরে একটি নতুন ইতিহাস রচনা করেছিলেন।
এত বছর পর সম্প্রতি ফের একবার সংবাদের শিরোনামে উঠে এসেছে তাঁর নাম। সুয়েজ খালে যে ঘটনা ঘটেছিল তার জন্য নাকি দায়ী ছিলেন এই মহিলা ক্যাপ্টেনই!
এমন একটি খবর ভাইরাল হয়ে যায় সমাজমাধ্যমে। যথারীতি তাঁর ভূমিকার সমালোচনা করে ফের সরব হন অনেকেই। তারপর জানা যায় সুয়েজ খালের ওই ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না।
সুয়েজ খালে জাহাজ অবরুদ্ধ হওয়ার ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থল থেকে বহু দূরে অন্য একটি জাহাজে সমুদ্রে ভেসে ছিলেন।