বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের জেরে অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে গোটা করাচি শহর। ছবি: রয়টার্স।
পুরো অন্ধকারে ডুবে গেল ইমরান খানের পাকিস্তান। শনিবার স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১২টা নাগাদ হঠাৎই ব্ল্যাকআউট হয়ে যায় গোটা দেশ। পাকিস্তানের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, বিদ্যুৎ সংযোগ চলে গিয়েছে করাচি, লাহৌর, ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিণ্ডি, পেশোয়ার, মুলতান, কোয়েটা, ফয়সলাবাদ, মুজফ্ফরগড়, নারোয়াল, ভাক্কার, কবিরওয়ালা, খানেওয়ালা, ভাওয়ালপুর এবং সুক্কুর-সহ দেশের ১১৪টি শহরে।
জিও নিউজ-এর রিপোর্ট বলছে, বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বালুচিস্তানের ২৯টি জেলা। এই বিপর্যয়ের জেরে মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবাও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। এমনকি, জিন্না আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও কোনও বিদ্যুৎ নেই।
জিও নিউজ-এর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ৫০০ কেভিএ ট্রান্সমিশন লাইনে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে পাকিস্তান জুড়ে ব্ল্যাকআউট হয়েছে। ইসলামাবাদের ডেপুটি কমিশনার হামজা শফাকত জানিয়েছেন, ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন ডেসপ্যাচ কোম্পানি(এনটিডিসি)-র বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এই বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে পাকিস্তানের বড় বড় শহরগুলোকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কিছু ক্ষণ সময় লাগতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তাঁরা আশা করছেন রবিবার সকাল ৮টার মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।
পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী ওমর আয়ুব রাতেই টুইট করে জানিয়েছেন, ‘বিদ্যুৎ বন্টন ব্যবস্থায় হঠাৎ করেই সমস্যা দেখা দেওয়ায় দেশ জুড়ে ব্ল্যাকআউটের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কী কারণে এই ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের বিদ্যুৎ বিভাগের সমস্ত কর্মীরা সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে কাজ শুরু করেছে। যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ সংযোগ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। বিদ্যুৎমন্ত্রী হিসেবে আমি নিজে পুরো বিষয়টির উপর নজর রাখছি’। পাশাপাশি, দেশবাসীকে এই সমস্যার জন্য ধৈর্য ধরার আহ্বানও জানিয়েছেন আয়ুব।
আরও পড়ুন: বালাকোটে অন্তত ৩০০ জঙ্গি নিহত হয়েছিল, দাবি প্রাক্তন পাক কূটনীতিবিদের
পাকিস্তান ব্ল্যাকআউট হওয়ার পর পরই টুইটারে #ব্ল্যাকআউট কথাটি ট্রেন্ডিং হয়েছে। ২০ হাজার টুইট হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।
এর আগে ২০১৫ সালে ব্ল্যাকআউট হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। রাজধানী ইসলামাবাদ-সহ দেশের ৮০ শতাংশ অঞ্চল অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। ন্যাশনাল গ্রিড বসে যাওয়ার কারণে সেই ভয়ানক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল গোটা পাকিস্তানকে। লাহৌর বিমানবন্দরেও বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল।
তৎকালীন বিদ্যুৎমন্ত্রী আবিদ শের আলি গোটা ঘটনার জন্য দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। সেই সঙ্গে অভিযোগ তুলেছিলেন, বিদ্রোহীরা দক্ষিণ-পশ্চিম বালুচিস্তান প্রদেশের নাসিরাবাদ জেলায় পাওয়ার গ্রিড বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেওয়ার কারণেই ব্ল্যাকআউট হয়েছিল গোটা পাকিস্তানে। এ বারের কারণ যদিও এখনও পরিষ্কার নয়।