বিস্ফোরণস্থল থেকে কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোঁয়া উঠছে। ছবি: সংগৃহীত।
পর পর দুটো জোরালো বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল বেইরুট। মঙ্গলবার বিকেলে বেইরুটের বন্দর এলাকায় বিস্ফোরণটি ঘটে। এর তীব্রতা এতটাই ছিল যে ১০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত ঘরবাড়ি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
লেবাননের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হামাদ হাসান জানিয়েছেন, এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭৩ জন। আহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার মানুষ। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। বিস্ফোরণে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বুধবার জাতীয় শোক দিবসের ঘোষণা করেছেন লেবাননের প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব।
এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, বেইরুটের বিস্ফোরণে এত লোকের প্রাণহানি হল, তার জন্য আমরা গভীর ভাবে শোকাহত।”
ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ ঘটে প্রাথমিক ভাবে বিষয়টি স্পষ্ট না হলেও প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, বন্দর এলাকার একটি গুদামে ২৭৫০ টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মজুত ছিল গত ছয় বছর ধরে। তাতেই বিস্ফোরণ ঘটেছে।
তদন্তকারীদের অনুমান, গুদামে বা তার আশপাশে আগুন লেগে গিয়েছিল। সেই আগুনের জেরেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণ নিয়ে এমন নানা মত উঠে আসলেও কী ভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছিল, তার প্রকৃত কারণ কী খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এত বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক মজুত কী ভাবে করা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছাড়া কেন এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করা হয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হবে। এই ঘটনার জন্যা যারা দায়ী তাদের কঠোরতম শাস্তি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একটা তদন্তকারী কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। পাঁচ দিনের মধ্যে সেই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
যেখানে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেই বন্দর এলাকা জনবহুল। বিস্ফোরণ স্থলের কাছাকাছি সব ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে গিয়েছে। ভেঙে পড়েছে বেশ কয়েকটি বহুতল। সেই ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে যান অনেক মানুষ। এমনটাই জানাচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় তখন বিকেল সাড়ে ৫টা। পর পর দুটো জোরাল বিস্ফোরণ হয় বন্দর এলাকায়। তীব্রতা এতটাই ছিল যে, আশপাশের বহু বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে যায়। আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন মানুষ। বহু মানুষ আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।