Russia Ukraine War

Russia Ukraine War: ফুরিয়ে আসছে অস্ত্র ভান্ডার, আর লড়াই সম্ভব নয়, মারিয়ুপোলে শেষ প্রহর গুনছে ইউক্রেন

মারিয়ুপোলে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে রাশিয়া। এত মানুষকে মারার পরেও আক্রমণ থামায়নি। বিপর্যস্ত তিনশোরও বেশি হাসপাতাল।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২২ ০৬:০৬
Share:

মৃতনগরীতে পরিণত হয়েছে মারিয়ুপোল।

নিরন্তর রুশ হানায় গোটা শহরময় ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে লাশ। কার্যত মৃতনগরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণের বন্দর শহর মারিয়ুপোল। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেও এত দিন প্রাণপণ লড়াই জারি রেখেছিল ইউক্রেনের সেনা। তবে তারা জানিয়েছে, মারিয়ুপোলে সম্ভবত আজই যুদ্ধের শেষ দিন। কারণ, যে পরিমাণ অস্ত্র মজুত, তা দিয়ে আর লড়াই করা সম্ভব নয়। যদিও ইউক্রেন সেনার প্রধান কমান্ডার জানিয়েছেন, মারিয়ুপোলের দখল এখনও তাঁদের হাতেই রয়েছে।

Advertisement

এর পাশাপাশি ৩৬তম মেরিন ব্রিগেড বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘৪৭ দিন ধরে বন্দর রক্ষায় সব রকম প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ বার আর পিছু হটা ছাড়া রাস্তা নেই।’’ ইতিমধ্যেই মারিয়ুপোল ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। তারাও জানিয়েছে, মারিয়ুপোলে এখন আজ়ভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্র এবং বন্দর দখলের লড়াই চলছে। ইউক্রেনের বক্তব্য, শুধু অস্ত্র বাড়ন্ত নয়। প্রায় অর্ধেক সেনা আহত। এখনও অঙ্গহানি হয়নি যাঁদের, তাঁরা এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।

এক দিকে ইউক্রেনের মরণপণ লড়াই অন্য দিকে রাশিয়ার মানবতা লঙ্ঘনের বিষয়টি আজ তুলে ধরেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি। তিনি জানিয়েছেন, মারিয়ুপোলে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে রাশিয়া। এত মানুষকে মারার পরেও আক্রমণ থামায়নি। হানায় বিপর্যস্ত তিনশোরও বেশি হাসপাতাল। এই পরিস্থিতিতে আজ দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেও অস্ত্র সাহায্য চেয়েছেন জ়েলেনস্কি। দক্ষিণ কোরিয়ার পার্লামেন্টে এক ভিডিয়ো বার্তায় তাঁর বক্তব্য, অস্ত্র পাওয়া গেলে শুধু সাধারণ মানুষ নন, ইউক্রেনকেও বাঁচানো সম্ভব হবে। তাঁর কথায়, ‘‘সামরিক প্রযুক্তিরও প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া আমাদের সাহায্য করতে পারে।’’ যদিও আজ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুদ্ধবিমান ধ্বংসকারী অস্ত্র চেয়েছিলেন। সেই অনুরোধ খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

অন্য দিকে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ জানিয়েছেন, শান্তি আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত হলেও সামরিক অভিযানে ভাটা পড়বে না। রুশ টেলিভিশনে লাভরভ জানান, প্রথম বার শান্তি আলোচনার সময়ে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নির্দেশ দিয়েছিলেন, অভিযান স্থগিত রাখার। তাঁর অভিযোগ, ইউক্রেনের তরফে সদর্থক সাড়া না মেলায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে না পৌঁছলে কোনও ভাবেই আক্রমণ থামানো হবে না। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামার। পুতিনকে তিনি অবিলম্বে যুদ্ধ থামানোর আবেদন জানান। তাঁর কথায়, ‘‘যুদ্ধে দু’পক্ষের কেউ জেতে না।’’ ইউক্রেনে হামলা শুরুর পরে নেহামারই প্রথম ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের নেতা, যিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বললেন।

ইতিমধ্যেই উপগ্রহচিত্রে দেখা গিয়েছে, পূর্ব ইউক্রেনে প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র জড়ো করছে রাশিয়া। দক্ষিণেও সেই কৌশল বজায় রাখতে চায় পুতিন বাহিনী। আমেরিকার এক আধিকারিক আজ জানিয়েছেন, ডনবাস অঞ্চলে দ্বিগুণ বা তিন গুণ সেনা বাড়াতে চলেছেন পুতিন। তবে এ ক্ষেত্রে কিছুটা সময় লাগতে পারে বলে জানান ওই আধিকারিক। আজ রাশিয়া দাবি করেছে, সপ্তাহান্তে ইউক্রেনে একাধিক ‘এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম’ নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেনের নিপ্রোয় চারটি এস-৩০০ অ্যান্টি এয়ারক্র্যাফ্ট মিসাইল ধ্বংস করা হয়েছে।

বুচা-র ঘটনার পরে একাধিক বার রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধপরাধের অভিযোগ তুলেছেন জ়েলেনস্কি। পেন্টাগনও পুতিনকে যুদ্ধপরাধী বলে দাগিয়ে দিয়েছিল। এ বার জার্মানির বিদেশমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবকও জানিয়েছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধপরাধের বহু ইঙ্গিত পেয়েছেন তাঁরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কাউন্সিল রাশিয়ার উপরে সাসপেনশন চাপিয়েছে। রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই সিদ্ধান্তের এ দিন নিন্দা করেছে উত্তর কোরিয়া।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement