নেপালে ক্রমেই বাড়ছে বৃষ্টি, বন্যার প্রাবল্য।
গত তিন দিন মুষলধারে বৃষ্টির জেরে হরপা বান এবং ধস কবলিত নেপালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬০। আহতের সংখ্যা ৩৮ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক। নিখোঁজ ৩৫-এর বেশি। প্রশাসন সূত্রে খবর, কমপক্ষে ১০,৩৮৫টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ১,১০৪ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র কাঠমান্ডু থেকেই উদ্ধার হয়েছে ১৮৫। দিন-রাত এক করে মোট ২৭,৩৮০ জন পুলিশকর্মী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে টানা বৃষ্টি চলছে উপত্যকা এবং সমতল মিলিয়ে নেপালের মোট ২৫টি জেলায়। তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বহু বাড়ি। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট এবং বেশ কয়েকটি ব্রিজ। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের পর্দায় দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন এলাকায় ডুবে গিয়েছে ঘরবাড়ি। শুধু জলের উপর জেগে রয়েছে বাড়ির চাল। অনেক জায়গায় বুক-জল সাঁতরে মাথায় করে জিনিসপত্র নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এগিয়ে চলেছেন বাসিন্দারা।
আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, অন্তত আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ইতিমধ্যেই বাগমতী, কমলা এবং কোশী নদী এবং বেশ কয়েকটি শাখা-নদীর জলস্তর বিপদসীমা ছাড়িয়েছে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে নদীগুলির পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দাদের জন্য। শনিবার রাতে ছ’ঘণ্টার জন্য ভারত-নেপাল সীমান্তের কোশী ব্যারেজের ৫৬টি স্লুইস গেট খুলে মোট ৩৭১,০০০ কিউসেক জল বার করা হয়েছে যা গত ১৫ বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে গিয়েছে বলে জানান এক আধিকারিক।
মরসুমি বৃষ্টির জেরে এই পরিস্থিতি আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিফলন বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। গত কয়েক বছর ধরে নেপালে খুব কম সময়ে অনেক বেশি পরিমাণ বৃষ্টিপাত হচ্ছে এবং এই অস্বাভাবিকতাই আস্তে আস্তে ‘স্বাভাবিক’ হয়ে উঠছে বলেআক্ষেপ তাঁদের।