(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর গল্ফ ক্লাবে গুলির পর ধৃত প্রৌঢ় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। চার রাউন্ড গুলিও চালিয়েছিলেন। তবে গুলি লাগেনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের গায়ে। তাঁকে ‘হত্যা করতে চাওয়া’ প্রৌঢ়কে গ্রেফতার করেছে আমেরিকার সিক্রেট সার্ভিস। ধৃতের নাম রায়ান ওয়েসলি রাউথ, বয়স ৫৮ বছর। ট্রাম্পকে মারতে ফ্লোরিডার গল্ফ ক্লাবে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল একে ৪৭ রাইফেল। অভিযুক্তের দীর্ঘ অপরাধের ইতিহাস রয়েছে, জানিয়েছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই।
জানা গিয়েছে, রায়ান কট্টর ডেমোক্র্যাট সমর্থক। ডেমোক্র্যাটিক দলের সমর্থনে সমাজমাধ্যমে অনেক লেখালেখি করেছেন তিনি। ধারাবাহিক ভাবে রাজনৈতিক আলোচনা করেছেন সমাজমাধ্যমে। নিজের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বরাবরই তিনি ছিলেন সোচ্চার। এমনকি, ওই প্রৌঢ় যুদ্ধ করতে ইউক্রেনেও গিয়েছিলেন।
আমেরিকার সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, উত্তর ক্যারোলিনার এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনিক্যাল স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন রায়ান। ২০১৮ সালে তিনি হাওয়াইতে গিয়ে সেখানেই স্থায়ী ভাবে থাকতে শুরু করেন।
সংবাদমাধ্যমে এর আগে সাক্ষাৎকারে প্রৌঢ় জানিয়েছিলেন, রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধে তিনি ইউক্রেনকে সমর্থন করেন। ইউক্রেনের হয়ে অস্ত্র ধরতে তিনি সেই দেশে পাড়ি দিয়েছিলেন। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একেবারে শুরুর সময়ে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি। যুদ্ধও করেছেন কিছু দিন। কিভে থেকে ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করার সৈন্য জোগাড় করছিলেন প্রৌঢ়। আমেরিকার লোকজনকেও যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনে আহ্বান জানাতেন তিনি। পরে আবার ফিরে আসেন আমেরিকায়।
রায়ান ঘোরতর ভাবে ট্রাম্পের বিরোধী। রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসাবে ট্রাম্পের অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নিক্কি হ্যালের জয় চেয়েছিলেন তিনি। নির্বাচন চলাকালীন ধারাবাহিক ভাবে নিক্কিকে সমর্থন করে পোস্ট করেছিলেন। ট্রাম্পের অপর প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির বিবেক রামস্বামীকেও সমর্থন করেছিলেন তিনি।
নানা সময়ে নানা ভাবে রায়ানের মুখে এমন স্লোগান শোনা গিয়েছে, যা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস প্রায়শই ব্যবহার করেন। ওই দু’জনের সমর্থক হিসাবেও পরিচিতি ছিল প্রৌঢ়ের।
উল্লেখ্য, দু’মাস আগে পেনসিলভানিয়ার একটি সভায় ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়েছিল। সেই গুলি ট্রাম্পের কান ছুঁয়ে বেরিয়ে গেলেও তাতে রক্তাক্ত হয়েছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা আমেরিকার আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান পদপ্রার্থী। ট্রাম্পের সেই আততায়ী রিপাবলিকান দলের সদস্য ছিলেন। তাঁকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে হত্যা করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এ বার ট্রাম্প গল্ফ ক্লাবে থাকাকালীন সেখানে গুলি চলল। এফবিআই জানিয়েছে, এই ঘটনাকে তারা হত্যার চেষ্টা হিসাবেই দেখছে এবং সেই অনুযায়ী তদন্ত শুরু করেছে।