মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। —ফাইল চিত্র ।
মলদ্বীপে চলা রাজনৈতিক সঙ্কটের মধ্যেই আরও জটিলতা বাড়ল। মলদ্বীপের প্রসিকিউটর জেনারেলকে প্রকাশ্য দিবালোকে একের পর এক ছুরির কোপ মেরে পালাল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। মলদ্বীপের ওই শীর্ষ আইনজীবীর নাম হুসেন শামিম। সোমবার তাঁকে রাস্তার উপরেই ছুরি মেরে পালায় এক দল আততায়ী।
সে দেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি মলদ্বীপের পার্লামেন্টের বেশ কয়েক জন সদস্যের উপর হামলা চালায় সে দেশের একটি ‘গ্যাং’। তখনই ছুরি নিয়ে শামিমের উপর হামলা চালানো হয় বলে খবর।
উল্লেখযোগ্য যে, রবিবারই মলদ্বীপের পার্লামেন্টে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন সে দেশের বর্তমান শাসক জোটের দুই দল পিএনসি, পিপিএম এবং মলদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহম্মদ সোলির দল ‘মলদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টি (এমডিপি)’-র সদস্যেরা। মুইজ্জুর মন্ত্রিসভায় সদস্য নিয়োগের জন্য পার্লামেন্টের অনুমোদন আদায় করতে ওই দিন বিশেষ অধিবেশন ডাকা হয়েছিল। কিন্তু মন্ত্রিসভার চার সদস্যকে নিয়োগ করার ব্যাপারে আপত্তি জানায় এমডিপি। অভিযোগ, মুইজ্জুর দলের সদস্যেরা সোলির দলের সাংসদদের পার্লামেন্টে ঢুকতেও বাধা দেন। এর পরে পার্লামেন্টের ভিতরেই হাতাহাতি শুরু করেন শাসক এবং বিরোধী দলের সদস্যরা। এর এক দিন পরেই হামলা চলল সে দেশের প্রসিকিউটর জেনারেলের উপর।
ক্ষমতায় থাকার সময় শামিমকে প্রসিকিউটর জেনারেল হিসাবে নিয়োগ করেছিল সোলির সরকার। তবে গত বছরের নভেম্বরের পর মলদ্বীপের সরকার বদলেছে। সোলিকে ক্ষমতাচ্যূত করে জোটের সরকার গড়েছেন মুইজ্জু। অন্য দিকে, বর্তমানে এমডিপি সে দেশের প্রধান বিরোধী দল। প্রসঙ্গত, মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জিতলেও মলদ্বীপের পার্লামেন্টে এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল সোলির এমডিপি।
বর্তমানে মলদ্বীপে শাসকজোট এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে ক্রমাগত টানাপড়েন চলছে। প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে ইমপিচমেন্ট (বেআইনি কার্যকলাপের ভিত্তিতে উচ্চ পদে থাকা সরকারি কর্তাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অপসারণ) প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রচুর স্বাক্ষরও সংগ্রহ করে ফেলেছে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সোলির দল। খুব শীঘ্রই মলদ্বীপের ‘চিনপন্থী’ প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর বিরুদ্ধে সে দেশের পার্লামেন্টে ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব পেশ করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। তবে এই পরিস্থিতিতে মুইজ্জুর পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে শাসকজোটের দুই শরিকদল। এই দুই দলের মধ্যে মুইজ্জুর নিজের দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি)-ও রয়েছে।