আবার জোট বদলেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ‘মহাগঠবন্ধন’ সরকারের হাত ছেড়ে এনডিএর শরিক হয়েছেন জেডিইউ প্রধান। নীতীশের জোটবদল নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনীতির আঙিনায় হইচই পড়েছে।
‘ডিগবাজি’ খাওয়ার আগে নীতীশ বিজেপি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক ছিলেন। সেই জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রবিবার সকালে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপির সমর্থন নিয়ে বিকেলেই ওই পদে শপথ নিয়েছেন নীতীশ। নীতীশের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সেই ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও ‘নীতি’র কারণে জোট বদলাতে দেখা গিয়েছে নীতীশকে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে গিয়েছে তাঁর কাছেই।
রাজনৈতিক নেতাদের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে জনগণের কৌতূহল তুঙ্গে থাকে। নীতীশ জোটবদলের পরে তাঁর সম্পত্তি নিয়েও আগ্রহ জন্মেছে মানুষের মনে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কত সম্পত্তির মালিক বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
২০২৩ সালের শেষ দিনে অর্থাৎ, ৩১ ডিসেম্বর মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সম্পত্তির খতিয়ান দিয়েছিল নীতীশ কুমার সরকার। সেই তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নগদ সাড়ে ২২ হাজার টাকা রয়েছে। তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা রয়েছে মোট ৪৮ হাজার টাকা।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নীতিশের অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ১৬ লক্ষ ৮৪ হাজার টাকা। পাশাপাশি দিল্লির দ্বারকা এলাকায় হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে নীতীশের।
২০০৪ সালে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিনি ওই ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন। তবে বর্তমান বাজারদরের হিসাবে ওই ফ্ল্যাটটির দাম এখন প্রায় দেড় কোটি টাকা।
এ ছাড়াও জেডিইউ প্রধানের কাছে ১১ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা মূল্যের একটি ফোর্ড ইকোস্পোর্ট গাড়ি রয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ১.২৮ লক্ষ টাকা মূল্যের দু’টি সোনার এবং একটি রুপোর আংটি। নীতীশের অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ১৩টি গরু এবং ১০টি বাছুরও রয়েছে। যেগুলির মোট দাম প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।
২০১৮ সালে বিধান পরিষদের নির্বাচনের জন্য নীতীশ যে নির্বাচনী হলফনামা কমিশনের কাছে জমা করেছিলেন সেই হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর হাতে থাকা অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ছিল প্রায় সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকা। স্থাবর সম্পত্তি বলতে ছিল দিল্লির ওই ফ্ল্যাটটিই। তখন ওই ফ্ল্যাটটির বাজারমূল্য ছিল ৪০ লক্ষ টাকা।
নীতীশের পুরনো জোটসঙ্গী তথা সদ্যপ্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের সম্পত্তির পরিমাণ আরও বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, তেজস্বীর হাতে নগদ রাশির পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। স্ত্রী রাজশ্রীর হাতে নগদ রয়েছে এক লক্ষ টাকা।
তেজস্বীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫৪ লক্ষ টাকা জমা রয়েছে। এ ছাড়াও তাঁর কাছে ৫.৩৮ লক্ষ টাকার শেয়ার এবং ২০০ গ্রাম সোনা রয়েছে। তাঁর স্ত্রীর কাছে রয়েছে ৪৮০ গ্রাম সোনা।
তেজস্বীর সম্পদের মধ্যে রয়েছে পটনার ফুলওয়ারি শরিফে দু’বিঘা জমি, গোপালগঞ্জে দু’বিঘা কৃষিজমি এবং দানাপুরে আট কাঠা অ-কৃষি জমি। ধানৌত ও গর্দানিবাগে তাঁর যে জমি রয়েছে, তার মূল্য ৩৬ লক্ষ টাকা।
আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গত্যাগের পর রবিবার বিকেলে নবম বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন নীতীশ।
উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন বিজেপির সম্রাট চৌধরি এবং বিজয়কুমার সিন্হা।
এ ছাড়াও মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়েছে জেডিইউয়ের বিজয়কুমার চৌধরি, শ্রবণ কুমার, বিজেন্দ্র যাদব এবং বিজেপির প্রেম কুমারের।
মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়েছে হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম) নেতা তথা জিতমরাম মাঝিঁর পুত্র সন্তোষকুমার সুমনের। রাজ্যের একমাত্র নির্দল বিধায়ক সুমিতকুমার সিংহও মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন।