পাম তেল ব্যবসায় নামছে ধস, তবু কাশ্মীর মন্তব্যে অনড় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের একটি শক্তিশালী ভোজ্য তেল প্রক্রিয়াকরণ সমিতি মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানিকারী সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে মালয়েশিয়া পাম তেল থেকে না আনার। মালয়েশিয়ার পাম তেলের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্কও বসানো হয়েছে। তবু মনোভাব বদলাতে রাজি নন মহাথির।

Advertisement

সংংবাদসংস্থা

কুয়ালালামপুর শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৪৬
Share:

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহাথির বিন মহম্মদ।ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

উদ্বেগজনক ভাবে গত কয়েক দিনে কমে গিয়েছে মালয়েশিয়া থেকে ভারতে পাম তেলের রপ্তানী। তবু চাপের মুখে নতি স্বীকার করতে রাজি নন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে কাশ্মীর বিষয়ক নিজের মন্তব্যে অনড় থাকতে চাইছেন তিনি। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে মহাথির মহম্মদ নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘‘যা বলেছি তা আমার মনের কথা।’’

Advertisement

গত মাসের শেষে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশ্মীরকে দখল ও অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ভারতকেই এই সমস্যা শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান করতে হবে। মানতে হবে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ। মালয়েশিয়ার এই প্রবল ভারত বিরোধিতায় ক্ষুব্ধ নয়াদিল্লি এবার জবাব দিতে চাইছে। মালয়েশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক কমিয়ে আনার, এমনকি প্রয়োজনে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথাও ভাবা হয়েছে। পাম তেলের ঘাটতি মেটাতে প্রয়োজনে সে দেশের পরিবর্তে ইন্দোনেশিয়ার সাহায্য নেবে ভারত। এই আবহে নতি স্বীকার করতে রাজি নন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।

মঙ্গলবারের বৈঠকে তিনি নিজের অবস্থান সম্পর্কে বলেন, আমরা মনে করি রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ কাশ্মীরের মানুষের জন্যেও প্রযোজ্য। এটা শুধু ভারত-পাকিস্তান নয়, সব দেশেরই উচিত এই সনদগুলি মেনে চলা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হলেও এই কথা প্রযোজ্য। আমরা যা মনে করি তাই বলেছি। সেখান থেকে সরে আসার কোনও কারণ নেই।

Advertisement

আরও পড়ুন:এক্সক্লুসিভ অভিজিৎ: কলকাতা প্রাণবন্ত মেধাচর্চার একটা বড় জায়গা ছিল, এখন আর তা বলা যাবে না
আরও পড়ুন:বোর্ড প্রেসিডেন্ট হলেন সৌরভ, টুইট করল বিসিসিআই

ভারত প্রথম থেকেই কাশ্মীর বিষয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের নাক গলানো পছন্দ করেনি। চিন হোক বা মালয়েশিয়া, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না বলেই জানিয়ে এসেছে নয়াদিল্লি। মালেয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপুঞ্জে এই মন্তব্য করার পরই বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভীশ কুমার বলেন, এই ধরনের মন্তব্যের কোনও ভিত্তি নেই।

দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নত করার জন্য বাড়তি সক্রিয় ছিল ভারত। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ২০১০ সালে মালয়েশিয়ার সঙ্গে কৌশলগত চুক্তি করেছিলেন। যা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে নরেন্দ্র মোদী আরও বৃহত্তর জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন। ২০১৮ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি করে আনা হন মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজেককে। মাহাথির মহম্মদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওযার পরে মোদী নিজেই চলে গিয়েছিলেন তাঁকে অভিনন্দন জানাতে। দেড়শোরও বেশি ভারতীয় সংস্থা এই মুহূর্তে সে দেশে কাজ করছে। কিন্তু তার পরেও মালয়েশিয়ার এই অবস্থানে বেজায় চটেছে ভারত।

ইতিমধ্যেই মুম্বইয়ের একটি শক্তিশালী ভোজ্য তেল প্রক্রিয়াকরণ সমিতি মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল আমদানিকারী সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছে মালয়েশিয়া পাম তেল থেকে না আনার। মালয়েশিয়ার পাম তেলের ওপর অতিরিক্ত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্কও বসানো হয়েছে। তবু মনোভাব বদলাতে রাজি নন মহাথির। তাঁর কথায়, ‘‘সবার মন রেখে চলা সম্ভব নয়। মালয়েশিয়া বাণিেজ্যের জন্যে সারা পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে। তবে মানুষের পক্ষে কথা বলার ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রাধিকার মানুষই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement