মহম্মদ ইমরান আবদ হামিদ। ছবি: সংগৃহীত।
ধর্ষণ, শ্লীলতাহানি ও যৌন নিগ্রহের মতো ঘটনার জন্য মহিলাদের পোশাক ও তাঁদের আচরণকে দায়ী করলেন মালয়েশীয় পার্লামেন্টের এক এমপি। শুধু তা-ই নয়, মহম্মদ ইমরান আবদ হামিদ নামে শাসক দলের ওই এমপি দেশের পুরুষদের মহিলাদের ‘প্রলোভনের’ হাত থেকে রক্ষা করতে আইন আনার প্রস্তাবও রেখেছেন। সেই প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে দেশের পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ দেওয়ান নেগারাতে। মালয়েশিয়ার একটি অনলাইন সংবাদ পোর্টালে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
হামিদ বলেছেন, ‘‘পুরুষদের রক্ষা করতে যৌন নির্যাতন বিরোধী আইন আনার প্রস্তাব রেখেছি আমি। আমি মনে করি মহিলাদের পোশাক, কথা-বার্তা, চালচলন পুরুষদের ধর্ষণের মতো কাজ করাতে বাধ্য করে। এমনকি মহিলারাই পুরুষদের পর্নোগ্রাফি দেখতে উত্তেজিত করেন। তাই এ সবের হাত থেকে পুরুষদের বাঁচানো জরুরি বলে মনে হয়।’’ তাঁর এই প্রস্তাব যাতে পার্লামেন্টের বাকি সদস্যেরা বিবেচনা করে দেখেন, সে আর্জিও জানিয়েছেন হামিদ। ইতিমধ্যেই হামিদের এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধান বিরোধী দলের নেতা তথা সেনেটের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট আবদুল হালিম আবদুল সামাদ।
তবে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। মহিলাদের উপর হওয়া সব নির্যাতনের দায় তাঁদের উপরেই চাপানোয় ক্ষিপ্ত দেশের নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী সংস্থাগুলি। জেনিফার ওয়েলস কু নামে এমনই এক অধিকার কর্মী বললেন, ‘‘এই ধরনের প্রস্তাব আইন হলে তো মেয়েদের জীবনের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাবে এ দেশে। ধর্ষককে শাস্তি না দিয়ে যদি সব দোষ নির্যাতিতার ঘাড়ে চাপানো হয়, তা হলে ওই ধরনের অত্যাচার তো বাড়বেই। সেই সঙ্গে মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলিও চাপা পড়ে যাবে। যে অন্যায় করছে তাকে তো তার শাস্তি পেতে হবে।’’
মালয়েশিয়ায় যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া মহিলাদের একাংশের সঙ্গে কথা বলে সম্প্রতি দেশের কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক শহর পুত্রজায়াতে যৌন নিগ্রহ বিরোধী বিল পাশের কথা ভাবা হয়েছে। এ বছরই সেই বিল আনার কথা। সেটা আটকাতেই হামিদের মতো নেতারা পুরুষদের পক্ষে আইন আনার প্রস্তাব দিচ্ছেন বলে মনে করছেন অনেকে।