সস্ত্রীক লর্ড মাউন্টব্যাটেন ও কন্যা প্যট্রিশিয়া। ফাইল চিত্র
পরাধীন ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড লুই মাউন্টব্যাটেন ও তাঁর স্ত্রী এডুইনার বিপুল সম্পত্তির কিছু অংশ নিলামে উঠতে চলেছে। নিলাম সামগ্রীর মধ্যে এমন অনেক জিনিসই রয়েছে যেগুলির সঙ্গে ভারতের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। আগামী ২৪ মার্চ লন্ডনের সদবিতে এই নিলাম হওয়ার কথা। যে সব সামগ্রী নিলামে তোলা হবে, সেগুলি মাউন্টব্যাটেন দম্পতির বড় মেয়ে প্যট্রিশিয়ার সম্পত্তি। যার মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু দুর্মূল্য অলঙ্কার।
২০১৭-য় ৯৩ বছর বয়সে মারা যান প্যাট্রিশিয়া। শুধু লর্ড মাউন্টব্যাটেনের কন্যাই নয়, ব্রিটিশ রাজপরিবারের সঙ্গেও সরাসরি আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল তাঁর। ১৯২৪ সালে জন্ম। তাঁকে বলা হত ‘সেকেন্ড কাউন্টেস মাউন্টব্যাটেন অব বার্মা’। রানি ভিক্টোরিয়ার পঞ্চম প্রজন্ম তিনি। ব্রিটেনের বর্তমান রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের স্বামী ফিলিপের আপন তুতো বোন। রাশিয়ার জ়ার-বংশের সঙ্গেও আত্মীয়তা ছিল তাঁর।
নিলাম সামগ্রীর মধ্যে রাজস্থানের জয়পুরে তৈরি সোনার হাতির মূর্তি জোড়া রয়েছে। লেডি মাউন্টব্যাটেনকে তাঁদের ২৪তম বিবাহবার্ষিকীতে যা উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন লর্ড মাউন্টব্যাটেন। ১৯৪৬ সালে দেওয়া সেই উপহারে লেখা ছিল ‘এডুইনা ফ্রম ডিকি’। দিল্লির ভাইসরয় ভবনে ১৯২২ সালে বাগদান হয়েছিল মাউন্টব্যাটেন দম্পতির। সে বছরই ওয়েস্টমিনস্টারে বিয়ে হয় দু’জনের। ওই হাতিটি ছাড়াও নিলামে উঠবে এডুইনার রংবেরঙের রত্নখচিত ‘টুটি ফ্রুটি’ নেকলেস। তা ছাড়া, রানি ভিক্টোরিয়ার একটি হিরের সেট ও সোনার ব্রেসলেটও নিলামে ওঠার কথা। এত সব মহামূল্যবান অলঙ্কারের দর কত উঠবে, তা নিয়ে আপাতত মুখ খোলেনি নিলাম সংস্থা।
তবে শুধু গয়নাই নয়, প্যাট্রিশিয়ার সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে প্রচুর দামি আসবাবও। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৭৬৭ সালে প্রখ্যাত ব্রিটিশ কারিগর টমাস শিপেনডেলের তৈরি একটি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান কাঠের চেস্ট। প্যাট্রিশিয়া তাঁর স্বামী জন ন্যাচবুলের সঙ্গে সপ্তদশ শতকের যে বাড়িতে থাকতেন, সেখানকার আসবাবের মধ্যে ওই চেস্টটিও অন্যতম।
শুধু বাবার সূত্রেই নয়, শ্বশুরবাড়ির সূত্রেও ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল প্যাট্রিশিয়ার। জন ন্যাচবুলের সঙ্গে বিয়ের পরে ভারতে গিয়ে বেশ কয়েক মাস মধুচন্দ্রিমা কাটিয়েছিলেন তিনি। তাঁদের বিয়েতে ‘ব্রাইডসমেড’ ছিলেন বর্তমান রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথ। প্যাট্রিশিয়ার শ্বশুর, মাইকেল ন্যাচবুল ছিলেন ভারতের কনিষ্ঠতম ভাইসরয়। সেই সূত্রে প্যাট্রিশিয়ার শাশুড়ি, ডোরিন একটি ‘ইম্পিরিয়াল অর্ডার অব ক্রাউন দ্য ক্রাউন অব ইন্ডিয়া’ পেয়েছিলেন। তৎকালীন ভারত সম্রাজ্ঞী রানি ভিক্টোরিয়ার দেওয়া সেই সম্মানপদকও নিলামে উঠবে মার্চে।