প্রতীকী ছবি।
পদ্মা পেরিয়ে বর-কনে এনে ঘরে তুলতে বেরিয়েছিলেন এক বাড়ি মানুষ। জনা কয়েক পড়শিও সঙ্গে। নৌকা ঘাটে ভিড়তে-না-ভিড়তেই বৃষ্টি এল ঝেঁপে। দৌড়ঝাঁপ করে সকলে এসে উঠলেন ঘাটের ইজারাদারদের বসার জন্য বানানো টং-ঘরে। সেই ঘরেই পড়ল বাজ। আশ্রয় নেওয়া ১৭ জনের মৃত্যু হল এক লহমায়। ঘরটির বাইরে থাকা জনা চারেক ঝলসে গেলেও প্রাণে বেঁচেছেন। বুধবার দুপুরে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জে এই ঘটনায় মৃতদের মধ্যে ১২ জন একই পরিবারের। ৪ জন তাঁদের পড়শি।
জেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের জনতার হাট গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে চার দিন আগে বিয়ে করেন পাশের ইউনিয়ন শিবগঞ্জের পাঁকা গ্রামে। নববিবাহিত বর-কনেকে আনতে বরযাত্রীরা নৌকা ভাড়া করে যাত্রা করেন শিবগঞ্জে। আকাশে জমতে থাকে বাদলের মেঘ। নৌকা শিবগঞ্জের ঘাটে ভেড়ার সময়েই নামে তুমুল বৃষ্টি। হাতের কাছে ঘাটের টং-ঘরেই মাথা বাঁচাতে ঢোকেন সকলে, যাতে বৃষ্টি কমলে বেরোতে পারেন। তাঁদের নিতে ঘাটে আসা পাঁকার এক গ্রামবাসীও আশ্রয় নেন ওই ঘরে। বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। হঠাৎ বাজ পড়ল সেই টং-ঘরে। মারা গিয়েছেন বরের বাবা, দাদা, জামাইবাবু, খুড়তুতো ভাই, পিসি, দিদি-সহ পরিবারের অনেকে। এঁদের মধ্যে পাঁচ জন মহিলা। এ ছাড়া মৃতদের মধ্যে রয়েছেন চার জন পড়শি এবং বরযাত্রীদের নিতে আসা পাঁকা গ্রামের সেই বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। হতাহতদের উদ্ধারকাজ শুরু হয়। খানিক পরে আসে দমকল বাহিনীও। বাজে পুড়ে জখম ৪ জনকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁদের এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহি মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে। যে বাড়িতে বিয়ের উৎসব চলছিল, সেই বাড়ির প্রাঙ্গণেই বুধবার খোঁড়া হয়েছে সারি সারি কবর। এখানেই হবে শেষকৃত্য।