—ফাইল চিত্র।
এক বছর আগের স্মৃতি এখনও টাটকা। আমেরিকান ভ্রমণ ও অভিযান সংস্থা ‘ওশানগেট’-এর সাবমার্সিবল যানে চেপে উত্তর অতলান্তিকের গভীরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল একদল ধনকুবেরের। সমুদ্রের তলদেশে জলস্তরের চাপে যানের ভিতরের দিকে প্রবল অন্তর্মুখী চাপ তৈরি হয়। এর জেরে ‘ইমপ্লোশন’ ঘটে। তুবড়ে যাওয়া যানের ভিতরে কার্যত নৃশংস ভাবে মৃত্যু হয়েছিল যাত্রীদের। কিন্তু এর পরেও ফের ওই একই অভিযানে যেতে চান এক আমেরিকান শিল্পপতি। এ দিন তাঁর মনোবাঞ্ছার কথা ঘোষণা করেছেন ল্যারি কনার।
কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের উপকূলের কাছে উত্তর অতলান্তিকের গভীরে পড়ে রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। সেই ধ্বংসাবশেষ দর্শনে পাড়ি দিয়েছিল টাইটান। যানটিতে ছিলেন খোদ ওশানগেট সংস্থার সিইও স্টকটন রাশ, এক টাইটানিক বিশেষজ্ঞ তথা ফরাসি সমুদ্র-অভিযাত্রী পল-অঁরি নারজ়োলে, এক ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হারডিং, শাহজ়াদা দাউদ নামে এক পাকিস্তানি-ব্রিটিশ ব্যবসায়ী ও তাঁর ছেলে সুলেমান। মূল জাহাজ এমভি পোলার প্রিন্স থেকে সমুদ্রে ঝাঁপ দেওয়ার প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় টাইটান। চার দিন পরে টাইটানিকের কাছে এক জায়গায় টাইটানের ছিন্নবিচ্ছিন্ন অংশ পাওয়া যায়।
ওহায়োর শিল্পপতি ও ধনকুবের ল্যারি কনারের দাবি, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে পৌঁছনো সম্ভব। শুধু তার জন্য যথাযথ ইঞ্জিনিয়ারিং প্রয়োজন। কনার হলেন ‘দ্য কনার গ্রুপ’-এর মালিক। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২০০ কোটি ডলারের কাছাকাছি। পেশায় ব্যবসায়ী কনার নেশায় একজন অভিযাত্রী। এর আগে মারিয়ানা খাত অভিযানে গিয়েছিলেন তিনি। ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনও ঘুরে এসেছেন।
গত বছর টাইটানের ঘটনার পরে ওশানগেটের প্রতিযোগী সংস্থা ‘ট্রাইটন সাবমেরিন’-এর সিইও প্যাট্রিক লাহে প্রকাশ্যে সংস্থাটির নিন্দা করেছিলেন। ওশানগেটের মৃত সিইও রাশকে ‘নরখাদক’ বলে আক্রমণও করেছিলেন। তখনই প্যাট্রিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন কনার। প্যাট্রিক দাবি করেছিলেন, তিনি টাইটানের থেকে ভাল সাবমার্সিবল তৈরি করে দেখাবেন। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের এমন একটা সাবমেরিন তৈরি করতে হবে, যা টাইটানিক যেখানে রয়েছে, সেই ৩৮০০ মিটার গভীরতায় নিরাপদে পৌঁছতে পারবে।’’ প্যাট্রিক ও কনার একসঙ্গে পরিকল্পনা করছেন। কনার বলেন, ‘‘আমি গোটা পৃথিবীকে দেখিয়ে দিতে চাই, সমুদ্র ভয়ানক। কিন্তু একই সঙ্গে সমুদ্র
সুন্দর ও উপভোগ্য।’’