কিম জং উনের অসুস্থতার জেরে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা পূরণে সামনে আনা হয়েছে বোন কিম ইয়ো জংকে। ফাইল চিত্র।
উত্তর কোরিয়ার সর্বেসর্বা কিম জং উন-এর শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে গুঞ্জন বেশ কয়েক মাস ধরেই চলছে। যদিও সে ব্যাপারে নিশ্চিত কোনও খবর জানতে পারেনি বাকি বিশ্ব। এই পরিস্থিতিতেই দক্ষিণ কোরিয়ার এক প্রাক্তন আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, কিম জং উন অসুস্থ অবস্থায় কোমাতে রয়েছেন। কিমের কাজের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁর বোন কিম ইয়ো জং।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট কিম ডে জুং-এর সহযোগী চ্যাং সং মিন সম্প্রতি সে দেশের সংবাদমাধ্যমে এই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘আমার কাছে খবর কিম জং উন কোমায় রয়েছেন। কিন্তু তাঁর জীবন শেষ হয়নি।’’ এই অসুস্থতার জেরেই উত্তর কোরিয়ার প্রতাপশালী শাসক কিছু ক্ষমতা তুলে দিয়েছেন তাঁর বোনের হাতে। চ্যাং এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘‘ক্ষমতার সম্পূর্ণ হাতবদল হয়নি। কিন্তু তাঁর অসুস্থতার জেরে যে শূণ্যতা তৈরি হয়েছে তা পূরণে সামনে আনা হয়েছে কিম ইয়ো জংকে।’’
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের পর, সে দেশের শাসন ব্যবস্থায় ‘সেকেন্ড ইন কম্যান্ড’ ধরা হয় তাঁর বোন কিম ইয়ো জংকে। গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ার ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্স সার্ভিসের প্রতিনিধিরা একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বোনের হাতে কিমের ক্ষমতা হস্তান্তর ছিল সেই বৈঠকের আলোচনার বিষয়। বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, ‘‘কিম ইয়ো জং, ওয়ার্কার্স পার্টির সেন্ট্রাল কমিটির ভাইস ডিপার্টমেন্ট ডিরেক্টর হিসাবে রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় পরিচালনা করছেন। যদিও ‘সর্বোচ্চ ক্ষমতা’ এখনও তাঁর দাদা হাতেই রয়েছে।’’ নিজের ‘চাপ কমাতেই’ নাকি বোনের হাতে কিছু ক্ষমতা তুলে দিচ্ছেন কিম। জানানো হয়েছিল দক্ষিণ কোরিয়ার সেই রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্প ‘নিষ্ঠুর’, গোপনে স্বীকারোক্তি তাঁর দিদির
গত কয়েক মাস ধরেই জনসমক্ষে অনুপস্থিতি কিমকে নিয়ে জল্পনা বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক মহলে। তাঁর শারীরিক অবস্থা ও মৃত্যু নিয়ে গত ক’মাসে বিভিন্ন খবর ছড়িয়েছে। এপ্রিলে ছড়িয়েছিল, হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারের সফল না হওয়ায় গুরুতর অসুস্থ পিয়ংইয়ংয়ের শাসক। তাঁর মৃত্যুর একটি ‘ফেক’ ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ায় জোরদার হয়েছিল জল্পনা। কিম জং উনের প্রয়াত দাদু ও উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন শাসক কিম টু সাং-এর জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠানে কিমের অনুপস্থিতি এই জল্পনার পারদ আরও চড়িয়েছিল। কিন্তু উত্তর কোরিয়া প্রশাসন এ নিয়ে খোলসা করে কখনই কিছু জানায়নি। উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ দাবি করেছিল, মে দিবস উপলক্ষে রাজধানী পিয়ংইয়ং-এর কাছে সানচনে গিয়েছিলেন কিম। সেখানে একটি সার কারখানার উদ্বোধন করেন তিনি। তবে দক্ষিণ কোরীয় আধিকারিক চ্যাংয়ের এই সাম্প্রতিক দাবি, কতখানি ঠিক— তা নিয়ে এখনও সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে ।
আরও পড়ুন: মোদী-নামেই ভোট প্রচারে কুশলী ট্রাম্প