বায়ুসেনার বিমান তেকে নামছেন সুদান থেকে উদ্ধার করা ভারতীয়রা। ছবি: পিটিআই।
গৃহযুদ্ধ-বিধ্বস্ত সুদান থেকে এ বার বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে উদ্ধার করা হল ২৫৬ ভারতীয়কে। বুধবার সুদানের রাজধানী খার্তুম থেকে তাঁদের সৌদি আরবের জেড্ডায় আনা হয়েছে। অন্য দিকে, মঙ্গলবার নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ আইএনএস সুমেধা পোর্ট সুদান থেকে যে ২৭৮ জন ভারতীয়কে উদ্ধার করেছিল, আজ তাঁরাও জেড্ডায় পৌঁছেছেন। ফরাসি সেনার একটি উদ্ধারকারী দলও বুধবার ১১ জন ভারতীয়কে উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার ওই গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ থেকে ফিরিয়ে এনেছে।
খার্তুমের ভারতীয় দূতাবাস ইতিমধ্যেই সুদানে বসবাসকারী ভারতীয়দের ফেরানোর জন্য একটি হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছে। তার মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর। তাঁদের পোর্ট সুদানে আনার জন্য গাড়িরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, সুদানে আটকে পড়া ভারতীয়দের উদ্ধার করতে মঙ্গলবার থেকে ‘অপারেশন কাবেরী’ শুরু করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। বুধবার রাতে জেড্ডা থেকে ৩৬০ জনকে দিল্লি আনা হয়েছে।
জেড্ডায় ফেরা ভারতীয়দের অনেকেই জানিয়েছেন, সেনাপ্রধান আবদেল ফতাহ আল-বুরহান এবং আধাসেনা আরএসএফ বাহিনীর প্রধান মহম্মদ হামদান ডাগলো ওরফে হেমেত্তির বাহিনীর লড়াইয়ে মধ্যে পড়ে তাঁদের প্রাণ সংশয়ের কথা। অভিযোগ, মাথায় রাইফেলের নল ঠেকিয়ে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে অনেককেই! খার্তুমের একটি কর্পোরেট সংস্থার এক ভারতীয় কর্মী বলেন, ‘‘আমাদের অফিসে ঢুকে লুটপাট চালিয়েছে সেনা। প্রায় ৮ ঘণ্টা আমাদের পণবন্দি করে রাখা হয়েছিল।’’
সুদানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকের সংখ্যা ৩,০০০-এর বেশি। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানী খার্তুম-সহ সুদানের বিভিন্ন এলাকায় সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর ক্ষমতার লড়াই শুরু হওয়ার পরে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল নয়াদিল্লি। এই পরিস্থিতিতে নৌসেনার জাহাজ আইএনএস সুমেধা এবং বায়ুসেনার সি-১৩০জে হারকিউলিস বিমানের সাহায্যে তাঁদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয় মঙ্গলবার। বিদেশ মন্ত্রক বুধবার জানিয়েছে, এ পর্যন্ত মোট ৫৩৪ জনকে জেড্ডায় আনা হয়েছে। এরই মধ্যে ৭২ ঘণ্টার সংঘর্ষবিরতির মধ্যেই নতুন করে সেনা-আধাসেনা লড়াই শুরু হয়েছে সুদানে।