কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। —ফাইল চিত্র।
নিজের দলেই কোণঠাসা হয়ে পড়লেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। সে দেশের সংবাদমাধ্যম সিবিসি নিউজ়ের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রুডোর দল লিবারেল পার্টির বেশ কয়েক জন এমপি আগামী সোমবার (২৮ অক্টোবর)-এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে ‘নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ’ করতে বলেছেন। যদিও সে দেশের রাজনীতির কারবারিদের একাংশের সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রুডোকে সরাসরি পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
রেডিয়ো কানাডার একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ট্রুডোর পদত্যাগ করার দাবিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন লিবারেল পার্টির ২৪ জন এমপি। যদিও ট্রুডো বা তাঁর দফতরের তরফে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। কানাডার পার্লামেন্টের অধিবেশন চলছে। তাই দলের রণকৌশল ঠিক করতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন লিবারেল পার্টির সাংসদেরা। সেখানেই প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন দলের সাংসদেরা।
সম্প্রতি ঐতিহ্যগত ভাবে ‘সুরক্ষিত’ দু’টি আসনেও হেরে যায় ট্রুডোর দল। তার পরেই দলে ট্রুডোর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পরেই একটি জনমত সমীক্ষায় উঠে আসে যে, ট্রুডোর নেতৃত্বে নির্বাচনে গেলে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হবে লিবারেল পার্টি। এই পরিস্থিতিতে ‘দল বাঁচাতে’ ট্রুডোর পদত্যাগ দাবি করেছেন তাঁর দলেরই এমপিরা। তা ছাড়া বিচ্ছিন্নতাবাদী খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ট্রুডো ভারতকে ধারাবাহিক ভাবে তোপ দাগতে থাকায়, লিবারেল পার্টির একাংশই কানাডার প্রধানমন্ত্রীর উপরে অসন্তুষ্ট বলে জানা গিয়েছে।
এক শরিক সমর্থন প্রত্যাহার করায় এমনিতে ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন সরকার এখন ‘সংখ্যালঘু’। এমতাবস্থায় দলের ভিতরে-বাইরে চাপের মুখে ট্রুডো। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ভারত কানাডার সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করেছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে পাল্টা অভিযোগ করা হয় যে, কানাডার আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠীগুলির সমর্থন পাওয়ার জন্য ট্রুডো সরকার নতুন করে নিজ্জর বিতর্ক সামনে নিয়ে আসছে। খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করেছিল ভারত। তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পরে নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো।