Cyclone Dana in West Bengal

আরও একটু এগোল ‘দানা’, জরুরি সাংবাদিক বৈঠক আলিপুর হাওয়া অফিসের, কী কী সতর্কতা জারি?

‘দানা’র দাপটে ভেঙে পড়তে পারে গাছ। টালির চাল উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কাঁচা ও পাকা দু’ধরনের রাস্তারই ক্ষতি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। বিস্তীর্ণ এলাকায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে বিদ্যুৎ সংযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৩৭
Share:

— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

শক্তি বাড়িয়ে উপকূলের দিকে আরও এগোল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। এই মুহূর্তে সে রয়েছে সাগরদ্বীপ থেকে মাত্র ৩১০ কিলোমিটার দূরে। এই পরিস্থিতিতে আলিপুর আবহাওয়া দফতর থেকে সতর্কবার্তা দিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করলেন আঞ্চলিক অধিকর্তা তথা আবহবিদ সোমনাথ দত্ত। জানালেন, ‘দানা’র দাপটে ভেঙে পড়তে পারে গাছ এবং শুকনো ডাল। রয়েছে কুঁড়েঘর, টালির চাল প্রভৃতি উড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। দমকা হাওয়ায় ক্ষতি হতে পারে কলা, পেঁপের মতো গাছের। বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। কাঁচা ও পাকা দু’ধরনের রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়তে পারে শহরের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা।

Advertisement

সোমনাথ আরও জানালেন, পারাদ্বীপ থেকে প্রতি মুহূর্তে নজর রাখা হচ্ছে ‘দানা’-র গতিবিধির উপর। আবহাওয়া দফতরের তরফে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতেই ‘দানা’র প্রভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু জেলায় জারি হয়েছে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে অতি ভারী (২১-৩০ সেন্টিমিটার) বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলায় এমনই দুর্যোগ চলবে। অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে দুই মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। দু’দিনই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির (৭-২০ সেন্টিমিটার) পূর্বাভাস রয়েছে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে।

সোমনাথ বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় এলাকায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইবে। পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূল বরাবর ২৫ অক্টোবরের সকাল পর্যন্ত এমনই বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। এর পর ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হবে।’’ পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার নিচু এলাকাগুলিতে জারি হয়েছে সতর্কতা। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত উত্তাল থাকবে সমুদ্র। আসবে একের পর এক উঁচু ঢেউ। সে কারণে আপাতত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার উপর জারি হয়েছে কড়া নিষেধাজ্ঞা।

Advertisement

আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার বেগে গত কয়েক ঘণ্টায় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে আরও সরেছে ‘দানা’। এই মুহূর্তে ‘দানা’ সাগরদ্বীপ থেকে মাত্র ৩১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। আবহবিদদের অনুমান, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটি স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে। ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়টি। ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় ‘দানা’র গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার। দমকা হাওয়ার গতি সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে পৌঁছতে পারে। সকালেই ‘দানা’র সম্ভাব্য গতিপথও জানিয়ে দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ সর্বোচ্চ গতিবেগে পৌঁছবে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। দমকা হাওয়ার বেগ পৌঁছবে প্রতি ঘণ্টায় ১২৫ কিলোমিটারে। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উপকূল থেকে আর মাত্র কিছু দূরেই থাকবে ‘দানা’। সে সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১০০-১১০ কিলোমিটার। শুক্রবার ভোর পর্যন্ত একই বেগে তাণ্ডব চালাবে ‘দানা’। তার পর শক্তি হারিয়ে শুক্রবার বিকেলের মধ্যেই সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ নেমে আসবে ঘণ্টায় ৭০-৮০ কিলোমিটারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement