লুইসকে ‘স্বাধীনতা পদক’ পরিয়ে দিচ্ছেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ফাইল চিত্র
গত ডিসেম্বরে নিজেই জানিয়েছিলেন ক্যানসারের স্টেজ ৪-এ রয়েছেন। জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে আমেরিকা যখন ফেটে পড়ল বিক্ষোভে, তিনি রাস্তায় নামতে না-পারলেও অন্তরের সমর্থন জানিয়েছিলেন। মনে করেছিলেন, এ তাঁরই সংগ্রাম। ষাটের দশক থেকে আমেরিকায় বর্ণবৈষম্যবাদের বিরুদ্ধে অহিংস লড়াইয়ের অন্যতম মুখ,
হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্য জন লুইস মারা গেলেন শুক্রবার। ৮০ বছর বয়সে।
১৯৮৭ সাল থেকে একাটানা জর্জিয়া থেকে ডেমোক্র্যাট রিপ্রেজেন্টেটিভ থেকেছেন লুইস। বাবা-মা ছিলেন আলাবামার ভাগচাষি। ছাত্রাবস্থা থেকেই বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেন। গণপরিবহণে সাদা আর কালোদের আলাদা বসার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ১৯৬১ সালে ওয়াশিংটন থেকে নিউ অর্লিয়েন্স পর্যন্ত বাসযাত্রা করেছিলেন যে ১৩ জন, লুইস ছিলেন সেই দলের শেষ জীবিত সদস্য। ১৯৬৩ সালের বিখ্যাত ‘ওয়াশিংটন পদযাত্রার’ কনিষ্ঠতম উদ্যোক্তাও তিনি। ওই অনুষ্ঠানেই মার্টিন লুথার কিং তাঁর ‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ নামাঙ্কিত বক্তৃতা করেন। লুইসও বক্তা ছিলেন সেদিন। ওই অনুষ্ঠানের বক্তাদের মধ্যেও তিনি ছিলেন শেষ জীবিত সদস্য। ১৯৬৫-র সেলমা থেকে মন্টগোমারির উদ্দেশে মিছিলে পুলিশের মারে লুইসের খুলি ফেটে গিয়েছিল। ‘ব্লাডি সানডে’ নামে কুখ্যাত হয়ে আছে সেই ঘটনা। গোটা দেশ সেই ছবি দেখেছিল টেলিভিশনে। প্রতিবাদ জমাট বেঁধেছিল আরও বেশি করে। ওই বছরের শেষ দিকেই আমেরিকা কৃষ্ণাঙ্গদের ভোটাধিকার স্বীকার করে নেয়। বারাক ওবামা তাঁর শোকবার্তায় বলেছেন, লুইস ছিলেন তাঁর ‘হিরো’। ‘‘শেষ বার লুইস আর আমি যে অনুষ্ঠানে একসঙ্গে ছিলাম, সেটা জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর প্রতিবাদে একটা ভার্চুয়াল জনসভা। লুইসের জীবনকাহিনির উপসংহার তো এমনই হওয়ার কথা!’’