মর্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আমেরিকায় অনাবাসীদের স্থায়ী বসবাসের ছাড়পত্র গ্রিন কার্ড নিয়ে জট কাটল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নয়া ঘোষণায় আবার গ্রিন কার্ডের আবেদন করতে পারবেন আমেরিকার এইচ ১ বি ভিসা নিয়ে কাজ করতে আসা অনবাসীরা। এইচ ১ বি ভিসা নিয়ে কাজ করতে এসে গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন নিয়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আপত্তি ছিল দীর্ঘ দিনের। করোনা কালে আমেরিকানদের স্বার্থ ‘অক্ষুণ্ণ’ রাখার ধুয়ো তুলে এইচ ১ বি ভিসা নিয়ে কাজ করতে আসা অনবাসীরা যাতে গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন না করতে পারেন, তা নিয়ে নয়া নিয়ম বলবৎ করেন ট্রাম্প। তাঁর যুক্তি ছিল, অনবাসীদের জন্য আমেরিকানদের কর্মসংস্থানে অসুবিধা হচ্ছে। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাঁর পূর্বসূরির জারি করা সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলেন।
এইচ ১ বি ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থেকে জীবিকা উপার্জন করেন বহু অনাবাসী ভারতীয়। গ্রিন কার্ড আবেদনকারীদের তালিকার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে এই ভারতীয়দের নাম। এ ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকেও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের বহু কর্মী আমেরিকায় কাজ করতে আসেন। গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদনকারীদের তালিকায় রয়েছেন তাঁরাও। তবে ট্রাম্প যে যুক্তিতে এঁদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, বুধবার তা খারিজ করে দিয়েছেন বাইডেন। ট্রাম্পের জারি করা ভিসা নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘‘ট্রাম্পের যুক্তি ভিত্তিহীন। তাঁর নীতি আমেরিকায় থাকা পরিবারগুলিকে তাদের প্রিয়জনদের থেকে আলাদা করেছে। আমেরিকার বাণিজ্য আর অর্থনীতিরও ক্ষতি করেছে।’’
গ্রিন কার্ড অনাবাসীদের ভোটাধিকার না দিলেও আমেরিকায় স্থায়ীভাবে থাকার অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দেয়। প্রতিবছর গ্রিন কার্ডের অনুমোদন চেয়ে তাই বহু আবেদন জমা পড়ে মার্কিন প্রশাসনের কাছে। বছরে এক লক্ষ আবেদনে ছাড়পত্রও দেয় প্রশাসন। কিন্তু ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞায় থমকে যায় সেই প্রক্রিয়া। গ্রিন কার্ডের লক্ষ লক্ষ আবেদন ছাড়পত্র না পেয়ে জমতে থাকে। বাইডেনের বুধবারের সিদ্ধান্ত এই প্রক্রিয়ার নতুন করে চালু করার পথ প্রশস্ত করবে। তবে তার সঙ্গে কাজও বাড়াবে বাইডেন প্রশাসনের। ক্যালিফোর্নিয়ার এক অভিবাসন আইনজীবী কার্টিস মরিসন বলেছেন, ‘‘গ্রিনকার্ডের আবেদনের প্রক্রিয়ায় যে পরিমাণ কাজ জমে আছে, তা সামালানোই এখন বাইডন প্রশাসনের বড় দায়িত্ব। করোনা পরিস্থিতিতে মাসের পর মাস ধরে যে আবেদন জমা পড়েছে, তাতে ছাড়পত্র দিতে বেশ কয়েক বছর লেগে যাবে আমেরিকার বিদেশ দফতরের।’’
এর আগেও ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধ মত পোষণ করেছেন বাইডেন। অভিবাসীদের নিয়ে ট্রাম্পের কুখ্যাত ‘জিরো টলারেন্স নীতি’, যার জেরে বহু শরণার্থী তাদের পরিবারকে হারিয়েছেন, তা-ও এই মাসের শুরুতেই বাতিল করে ঢেলে সাজানোর নির্দেশ দেন বাইডেন।