কিরণ আহুজা।
বাইডেন প্রশাসনে শক্ত হচ্ছে ভারতীয়দের ভিত? প্রেসিডেন্টের তরফে আমেরিকার শীর্ষ প্রশাসনিক পদে একের পর এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মনোনয়ন সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে, মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
হোয়াইট হাউসের ‘অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট’ দফতরের ডিরেক্টর পদে নীরা টন্ডনকে আনা নিয়ে বিতর্কের মাঝেই ‘পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট’ দফতরের প্রধান হিসেবে মঙ্গলবার আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নাম মনোনীত করলেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানালেন, আইনজীবী এবং সমাজকর্মী কিরণ আহুজাকে ওই দায়িত্ব দিতে চান তিনি। সব ঠিক থাকলে তিনিই হবেন এই দায়িত্বে আসা প্রথম ভারতীয়।
আমেরিকার কমপক্ষে ২০ লক্ষ প্রশাসনিক আধিকারিককে পরিচালনার ভার রয়েছে পার্সোনেল ম্যানেজমেন্ট দফতরের উপর। বছর ৪৯-এর কিরণ অবশ্য এর আগেও এই দফতরে প্রশাসনিক পদেই দায়িত্ব সামলেছেন। ২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দফতরটির তৎকালীন ডিরেক্টরের অধীনে চিফ অব স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। তা ছাড়া দু’দশকেরও বেশি সময় ধরে পাবলিক সার্ভিস এবং জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। বর্তমানে তিনি প্রাদেশিক জনসেবামূলক সংগঠন, ‘ফিলানথ্রপি নর্থওয়েস্ট’-এর সিইও।
কিরণের কেরিয়ার শুরু হয়েছিল আমেরিকার বিচারবিভাগের নাগরিক অধিকার আইনজীবী হিসেবে। ২০০৩ সালে ‘ন্যাশনাল এশিয়ান প্যাসিফিক আমেরিকান উইমেন্স ফোরাম’-এর প্রতিষ্ঠার সময় থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টরের দায়িত্ব সামলেছেন। ওবামা প্রশাসনের সঙ্গেও বছর ছয়েক যুক্ত ছিলেন কিরণ।
অপেক্ষা শুধু সেনেটের অনুমোদনের। যা পেলেই বাইডেন প্রশাসের শীর্ষ পদে নেতৃত্ব দিতে দেখা যাবে ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া থেকে আইনের স্নাতক, এই ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে। প্রশাসনের অন্দরের খবর, পদে এলে নাগরিক আইন সংক্রান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের করে যাওয়া নীতিতে বড়সড় বদল আনার বিষয়ে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে তাঁকে। নির্দেশ তেমনই।
অন্য দিকে, রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের কয়েক জনের ‘অপছন্দের’ নীরা টন্ডনের মনোনয়ন সরিয়ে নিতে নারাজ হোয়াইট হাউস। মঙ্গলবারই এক বিবৃতির মাধ্যমে এই বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব জেন সাকি। বুধবার নীরার ‘কনফার্মেশন’ প্রসঙ্গে দ্য সেনেট বাজেট কমিটির সদস্যরা ভোট প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করবেন। পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ভোট দেবেন সেনেট হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড গভর্নমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স কমিটি। উল্লেখ্য, কয়েক জন নেতার হুমকি মতো ভোট প্রক্রিয়া ঘিরে যদি কোনও রকমের জট সৃষ্টি হয়, তা হলে এর সরাসরি প্রভাবে বাজেট প্রস্তুত এবং পেশে দেরি হওয়া অবধারিত।
তবে রিপাবলিকানদের বিরোধিতার মুখে প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি নীরার হয়ে রুখে দাঁড়িয়েছে সে দেশের চেম্বার অব কমার্সও। #ইয়েসনীরা—তাঁর সমর্থনে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের এই হ্যাশট্যাগও এখন টুইটারে ট্রেন্ডিং। তবে শেষমেশ প্রথম অ-শ্বেতাঙ্গ মহিলা হিসেবে অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেট দফতরের প্রধান হওয়া নীরার হয়ে ওঠার চাবিকাঠি অবশ্য সেনেটের কাছেই।