জো বাইডেন (বাঁ দিকে) ও ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল চিত্র
‘অ্যাভিয়েটর সানগ্লাস’ বরাবরই তাঁর খুব প্রিয়। সম্প্রতি উইনসর দুর্গে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের সঙ্গে দেখা করার সময়েও আমেরিকান প্রেসিডেন্টের চোখে ছিল তাঁর প্রিয় সেই রোদচশমা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ বার নিজের প্রিয় সেই ব্র্যান্ডের রোদচশমা উপহার দিলেন জো বাইডেন। গত কাল জেনিভায় শতাব্দী প্রাচীন ভিলায় রুদ্ধদ্বার বৈঠকে পুতিনের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাইডেন। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য এক জোড়া উপহার এনেছিলেন বাইডেন। ম্যাসাচুসেটসে তৈরি যুদ্ধবিমানের পাইলটদের ব্যবহারের বিশেষ সানগ্লাস আর ক্রিস্টালের বাইসন মূর্তি।
উপহারের আড়ালে অস্বস্তি অবশ্য এড়ানো যায়নি। কারণ, দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে বেরোনোর পরেই গত জানুয়ারিতে আমেরিকার ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডব চালানো দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুতিন। সেই সঙ্গেই রুশ প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, তাঁর দেশের বিরোধী রাজনৈতিক আন্দোলন নিয়ে তিনি কথা বলতে চান না, কারণ আমেরিকার বর্ণবৈষম্য-বিরোধী আন্দোলন ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ নিয়েও তিনি মুখ খুলতে চাইছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘গত কয়েক মাসে আমেরিকায় নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। আমি আমেরিকার মানুষের সঙ্গে সহমর্মী। আমরা কখনও চাইব না আমাদের দেশেও এই ধরনের (বর্ণবিদ্বেষী) কোনও ঘটনা ঘটুক। আবার অন্য দিকে, ক্যাপিটলে প্রায় ৪০০ জন মানুষ রাজনৈতিক দাবিদাওয়া নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের অনৈতিক ভাবে গ্রেফতার করা হল। তাঁদের জঙ্গিও বলা হচ্ছে!’’ অনেকেই মনে করছেন কৌশলে রাশিয়ার বিরোধীনেতা অ্যালেক্সেই নাভালনিকে আক্রমণ ও তাঁর কারাবাসের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার জন্যই ক্যাপিটল প্রসঙ্গ তুলেছেন পুতিন।
‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের সঙ্গে ক্যাপিটল তাণ্ডবের তুলনায় অবশ্য ক্ষুব্ধ বাইডেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই দু’টো বিষয়কে এক করে দেওয়া তো হাস্যকর।’’
পুতিন-বাইডেনের বৈঠকের পর দিনই ইউক্রেনের ন্যাটো-য় যোগ দেওয়া নিয়ে মুখ খুলেছে ক্রেমলিন। রুশ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সাংবাদিক বৈঠকে আজ জানান, তাদের পড়শি দেশ এই সামরিক জোটের সদস্য হলে তা রাশিয়ার পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তিকর হবে। সম্প্রতি রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের সীমান্ত বিরোধ চরমে উঠেছে। বাইডেন-ই প্রথম পুতিনকে ফোন করে সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার আর্জি জানিয়েছিলেন। তবে ইউক্রেনকে ন্যাটোর অংশ হতে গেলে বেশ কিছু শর্ত মানতে হবে বলে আগেই জানিয়েছেন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট। তাঁর সঙ্গে আগে কথা না-বলে পুতিনের সঙ্গে বাইডেন বৈঠকে বসায় অসন্তোষ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনেস্কি-ও।