ছবি: সংগৃহীত।
আফগানিস্তানে তালিবান আগ্রাসন সত্ত্বেও সেনা প্রত্যাহার পর্ব চালিয়ে যাবে আমেরিকা। তবে নাগরিকদের সরিয়ে আনতে সে দেশে ৩ হাজার থেকে বাড়িয়ে প্রায় ৫ হাজার সেনা পাঠানো হবে বলে ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আমেরিকার এই মিশনে বিঘ্ন ঘটালে তালিবানকে কড়া সামরিক পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
জাতীয় সুরক্ষা দলের সঙ্গে পরামর্শের পর আফগানিস্তানে পাঠানো সেনার সংখ্যা বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাইডেন। একই সঙ্গে তিনি এ-ও জানিয়েছেন, আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে সে দেশ থেকে আমেরিকার সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে বদল ঘটছে না। শনিবার বাইডেন জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে আমেরিকার দূতাবাসের কর্মীদের সরিয়ে আনার পাশাপাশি সেনাকে সাহায্যকারী সে দেশের নাগরিকদেরও নিরাপদে সরিয়ে আনার কাজ চলবে। সেই সঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, “আমেরিকার কর্মীদের বা আমাদের এই মিশনে বিঘ্ন ঘটালে তার দ্রুত জবাব দেবে সামরিক বাহিনী।” পেন্টাগনের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৩০ হাজারের কাছাকাছি মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরানোর কাজ করবে আমেরিকা।
প্রসঙ্গত, উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফ, তার পর গজনি এবং কন্দহর শহর দখলের পর কাবুলের দিকে দ্রুত অগ্রসর হলেও তালিবানের বিরুদ্ধে এখনও পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেননি বাইডেন। উল্টে প্রায় ২০ বছর ধরে সে দেশে মোতায়েন আমেরিকার সেনা প্রত্যাহার যথারীতি চলবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, আফগানিস্তানে সেনার সংখ্যা বৃদ্ধির ঘোষণা এসেছে মাজার-ই-শরিফ তালিবানের হাতে চলে যাওয়ার পর।
তবে বাইডেন সরকার যে তালিবানের বিরুদ্ধে সরাসরি সংঘাতে যেতে চান না, তা স্পষ্ট করেছেন তিনি। বস্তুত, আফগানিস্তানে তালিবানি আগ্রাসনের দায়ও প্রকারন্তরে পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘাড়েই চাপিয়েছেন বাইডেন। তাঁর দাবি, “দায়িত্ব গ্রহণের পর পূর্বসূরির উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত একটি চুক্তি পেয়েছিলাম… যার জেরে ২০০১ সালের পর তালিবানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে। আমার কাছে দু’টি রাস্তা খোলা ছিল। ওই চুক্তি অনুসরণ করে আমাদের ও মিত্রশক্তির সেনা নিরাপদে সরিয়ে আনা বা আফগানিস্তানে আরও সেনা পাঠিয়ে সে দেশের গৃহযুদ্ধে ফের জড়িয়ে পড়া।” তবে বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি দ্বিতীয় পথ অনুসরণ করেননি।
যুদ্ধ এড়ানোর কথা জানিয়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরফ গানিও। শনিবার তিনি জানিয়েছেন, আরও প্রাণহানির আশঙ্কায় নাগরিকদের উপরে যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে চান না। তবে এই পরিস্থিতির অবসানে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাবেন বলে সূত্রের খবর। আফগানিস্তানে হিংসা রুখতে শনিবার আমেরিকার বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিকেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন গনি। সংবাদমাধ্যমের কাছে ব্লিকেনের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেন, “হিংসা রুখতে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগে দ্রুততা আনার বিষয়ে দু’জনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।”