ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে জো বাইডেন। ফাইল চিত্র ।
অতি সন্তর্পণে এবং সকলের নজর এড়িয়ে! সোমবার সকালে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে এ ভাবেই হঠাৎ করেই ঝটিকা সফরে পৌঁছন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেনের এই সফরের কথা নাকি কাকপক্ষীতেও টের পায়নি! আর তার পর থেকেই প্রশ্ন উঠছে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি এবং সমাজমাধ্যমের যুগে কী ভাবে সকলের নজর এড়িয়ে জ়েলেনস্কির দেশে প্রবেশ করলেন বাইডেন? প্রকাশ্যে এল নেপথ্য কাহিনি।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রবিবার ভোর ৪টা নাগাদ সংবাদমাধ্যমের নজর এড়িয়ে আমেরিকার বায়ুসেনার একটি বোয়িং ৭৫৭ বিমানে চড়ে ইউক্রেনের উদ্দেশে রওনা দেন আমেরিকার ৮০ বছর বয়সি শীর্ষ ডেমোক্র্যাটিক নেতা৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুষ্টিমেয় দুই নিরাপত্তা কর্মী, চিকিৎসকদের একটি ছোট দল, ঘনিষ্ঠ কয়েক জন উপদেষ্টা এবং দু’জন সাংবাদিক।
বাইডেন যে বিমানে চেপে গিয়েছিলেন তা সি-৩২ নামেও পরিচিত। তুলনামূলক ভাবে আয়তনে ছোট বিমানটি সাধারণত আন্তর্জাতিক ভ্রমণে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত যেখান থেকে বাইডেন আন্তর্জাতিক যাত্রার সময় বিমানে চড়েন, সেখান থেকে বেশ খানিকটা দূরে এই বিমান দাঁড় করানো হয়েছিল। যাতে বাইরে থেকে ওই বিমানে বাইডেনের উপস্থিতি কেউ ঘুণাক্ষরেও টের না পান, তার জন্য প্রতিটি জানালার ঝাঁপও ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
যিনি যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হন, তাঁর গতিবিধির উপর সারা বিশ্বের নজর থাকে। অতীতেও এর অন্যথা হয়নি। কিন্তু কাউকে কিছু জানতে না দিয়ে বাইডেনের ইউক্রেন সফর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলকে বেশ অবাকই করেছে।
বাইডেন সাধারণত যখন বিদেশ সফরে যান, তখন সঙ্গে রেডিয়ো, টেলিভিশন, খবরের কাগজ মিলিয়ে অন্ততপক্ষে ১৩ জন সাংবাদিকের একটি দল সঙ্গে যান। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এক জন চিত্রগ্রাহক এবং একজন সাংবাদিক ছাড়া কাউকে নিয়ে যাওয়া হয়নি।
বাইডেনের সঙ্গে সফরে থাকা সাংবাদিক সাবরিনা সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তাঁকে এবং এক জন চিত্রগ্রাহককে ওই দিন রাতেই ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁরা যেতে সম্মতি প্রকাশ করার পর তাঁদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে নেওয়া হয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, প্রেসিডেন্ট যত ক্ষণ না ফিরে আসছেন, তত ক্ষণ তাঁরা ফোন পাবেন না।
প্রথমে প্রেসিডেন্ট বাইডেন-সহ বাকিদের নিয়ে ওয়াশিংটন থেকে জার্মানির রামস্টেইনে উদ্দেশে রওনা দেয় বিমান। সেখান থেকে প্রসিডেন্টকে নিয়ে যাওয়া হয় পোল্যান্ড। বিমানটি অবতরণ করে পোল্যান্ডের রজেসজো-জাসিওনকা বিমানবন্দরে। সেখান থেকে একটি এসএইভি গাড়িতে আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেই গাড়ি ছিল কালো কাচে ঢাকা এবং তাতে কোনও সাইরেনের ব্যবহার করা হয়নি।
সাবরিনা জানিয়েছেন, ট্রেনেও তাঁদের প্রেসিডেন্টের দিকে তাকাতে বারণ করা হয়েছিল।
এর পর ১০ ঘণ্টার সফর শেষে ইউক্রেনে পৌঁছন বাইডেন। দেখা করেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে।